1. shahinsalman99@gmail.com : দৈনিক আজকের জনতার কথা : দৈনিক আজকের জনতার কথা
  2. info@www.dainikajkerjanatarkotha.online : দৈনিক আজকের জনতার কথা :
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সিরাজগঞ্জে ডিলারের বিরুদ্ধে সার চুরি ও অতিরিক্ত দামে বিক্রির অভিযোগ রাজশাহী ৩ আসনে লিফলেট বিতরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন ইকবাল হোসেন কুড়াখাল ও মগপুস্কুরিনীকে মডেল গ্রাম গড়ার উদ্যোগ খানজাহান আলী থানার ১টি ওয়ার্ড ও ২টি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরাইলে প্রস্তুতি সভা ৫২টি মন্দিরে পূজা অনুষ্ঠিত হবে ১৫ বছর পর সম্মেলনে ফখরুলের হুঁশিয়ারি: যে নেতার নামে স্লোগান হবে, সেই মাইনাস হবেন ফুলপুরে ইউনিয়ন কৃষক দলের কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত দুইটি শব্দ(কবিতা) পবা উপজেলার দর্শন পাড়া ইউনিয়ন রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত এ রায়হানুল আলম রায়হান এর উঠান বৈঠক “ভাইরাল ছবিতে বিতর্কে স্কুল কমিটি সদস্য”

ভোলাগঞ্জের পর এবার সুনামগঞ্জে পাথর হরিলুটের পায়তারা

প্রতিনিধির নাম :
  • প্রকাশিত: বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

ভোলাগঞ্জের পর এবার সুনামগঞ্জে পাথর হরিলোটের পায়তারা

বিশেষ প্রতিবেদনে : অমিত তালুকদার

সারাদেশে আলোচিত ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের অবৈধ সরবরাহ নিয়ে প্রশাসন তৎপর থাকলেও নতুন করে সুনামগঞ্জের সুরমা ব্রিজ (আব্দুর জহুর সেতু) সংলগ্ন কুতুবপুর এলাকায় পাথর লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। জান্নাত এন্টারপ্রাইজ এন্ড স্টোন ক্রাশার মিলে পাওয়া নিলামের পাথরের সঙ্গে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের মিশ্রণের অভিযোগে বিষয়টি নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

মালিকের দাবি বনাম কাগজের অসঙ্গতি

অনুসন্ধানী দল মালিক মোঃ শহীদ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন—

“এই পাথর অবৈধ নয়, আমি নিলামের মাধ্যমে এক লাখ ঘনফুট পাথর কিনেছি। আমার কাছে কাগজপত্রও আছে।”

কিন্তু তাঁর প্রদত্ত কাগজে বড় ধরনের অসঙ্গতি চোখে পড়ে।

কাগজে উল্লেখ আছে মোট ২,৯৯,৪৩২ ঘনফুট পাথরের কথা, অথচ শহীদ আলমের দাবি মাত্র ১ লাখ ঘনফুট।

কাগজে অংশগ্রহণকারীর নাম মোছাঃ সেলিনা আক্তার, আদন ড্রেজিং লিমিটেড, কারওয়ান বাজার, ঢাকা।

সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন সৈয়দ মনিরুজ্জামান ও মোঃ কবির হোসেন।

কোথাও শহীদ আলম বা জান্নাত এন্টারপ্রাইজের নাম নেই।

ফলে প্রশ্ন উঠছে—তিনি কীভাবে বিপুল পরিমাণ পাথরের মালিকানা দাবি করছেন?

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান—

“নিলামের নাম করে রাতের আধারে অন্য জায়গা থেকে পাথর আনা হয়।”

“কেউ জানে না এই পাথরগুলো কোথা থেকে আসে।”

“সাদা পাথরের সঙ্গে অন্য কোয়ারির পাথর মিশ্রণ নতুন নয়।”

তাদের দাবি—বর্তমানে সুনামগঞ্জের সব কোয়ারি বন্ধ, তাই বৈধ পথে এত পাথর আসার কোনো সুযোগ নেই।

প্রশাসনিক অসঙ্গতি

কাগজে উল্লেখ আছে—পাথর হস্তান্তরের তারিখ ২৫ জুন ২০২৫। কিন্তু দুই মাস পেরিয়ে গেলেও সব পাথর স্থানান্তর হয়নি। শহীদ আলমের দাবি তিনি অর্ধেক পাথর পেয়েছেন, বাকি আনতে পারেননি। কিন্তু কেন আনতে পারেননি—সে বিষয়ে সঠিক জবাব দিতে পারেননি তিনি।

অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর তথ্য

“দৈনিক ঘোষণা”-এর অনুসন্ধান দল ঘটনাস্থল ধোপাজান নদীর পশ্চিমপাড়ে গিয়ে ভিন্ন চিত্র দেখতে পায়। সেখানে প্রায় ১০ লক্ষ ঘনফুটেরও বেশি পাথর মজুদ রয়েছে। গ্রামজুড়ে বাড়ির সামনে অবৈধভাবে স্তূপ করে রাখা পাথরের দৃশ্য চোখে পড়ে।

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান—

নিলামের কাগজে দেখানো সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি পাথর তারা নিয়ে গেছেন।

২,৯৯,৪৩২ ঘনফুটের নিলাম কাগজকে অজুহাত করে অবৈধ পাথর লুট চলছে।

দিনে-দুপুরে কিংবা রাতে সুযোগ বুঝে ট্রলি গাড়িতে এসব পাথর পাচার করা হচ্ছে।

সাংবাদিককে হুমকি

শহীদ আলমের ক্রাশার মিলে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি অনুসন্ধানী প্রতিবেদকের উদ্দেশে বলেন—

“সুনামগঞ্জে আড়াইশো সাংবাদিক আছেন, কিন্তু কেউ এখানে আসে না। আপনি এসেছেন—এটাই বড় বিষয়।”

এই বক্তব্যকে অনুসন্ধানী দল হুমকিমূলক আচরণ হিসেবে দেখছে। এতে স্পষ্ট, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কার্যক্রম তাঁকে অস্বস্তিতে ফেলেছে।

প্রশাসনের বক্তব্য

এ বিষয়ে বিশ্বম্ভপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেরিন দেবনাথ বলেন—

“নিলামের পাথর নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে ডিসি স্যারের সঙ্গে আলোচনা করবো। প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে।”

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, যে সব অবৈধ পাথর নিলামের আওতায় নেই, সেগুলো জব্দ করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। জেলা প্রশাসন বলছে, অবৈধভাবে মজুদকৃত এসব পাথর জব্দ করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।

মূল প্রশ্নগুলো

১. শহীদ আলমের নাম কাগজে নেই, তবু তিনি কীভাবে বৈধ মালিক দাবি করছেন?
২. এক লাখ বনাম প্রায় তিন লাখ ঘনফুট—সংখ্যাগত বৈপরীত্য কেন?
৩. ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর মিশ্রিত হলে প্রশাসন কীভাবে তা শনাক্ত করছে?
৪. নিষিদ্ধ অবস্থায় এত বিপুল পরিমাণ পাথর কোথা থেকে এলো?
৫. জব্দকৃত অবৈধ পাথরগুলো কত দ্রুত সরকারি কোষাগারে জমা পড়বে?
৬. সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় প্রশাসন কি আলাদা পদক্ষেপ নেবে?

জান্নাত এন্টারপ্রাইজ এন্ড স্টোন ক্রাশারের নিলামের পাথর নিয়ে অসঙ্গতি, মালিকের দ্ব্যর্থবোধক বক্তব্য, সাংবাদিককে হুমকি, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অবৈধ পাথর মজুদ এবং প্রশাসনিক শৈথিল্যের কারণে নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে সুনামগঞ্জের পাথর খাত। এখন নজর জেলা প্রশাসনের দিকে—তারা কীভাবে এই পাথর জব্দ, সাংবাদিক নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে পরিস্থিতি সামাল দেয়, সেটিই দেখার বিষয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট