1. shahinsalman99@gmail.com : দৈনিক আজকের জনতার কথা : দৈনিক আজকের জনতার কথা
  2. info@www.dainikajkerjanatarkotha.online : দৈনিক আজকের জনতার কথা :
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ময়মনসিংহে ৫২তম গ্রীষ্মকালীন ফুটবল (ছাত্র-ছাত্রী) ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক সমবায় বর্ষ ২০২৫ উদযাপন: মোহনপুরে আলোচনা সভা ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত রাকসু নির্বাচনকে সুষ্ঠ করতে রাবির আইন-শৃঙ্খলা সভায় পুলিশ কমিশনার’র প্রত্যয় হাতেগড়া হাজারো সাংবাদিকের মাঝে বেঁচে আছেন আলতাফ হোসেন : মামুন-অর-রশিদ আমার হয়নি শোনা সাহিত্য আচার্য্য( স্বরচিত) ময়মনসিংহে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহের সমাপনী অনুষ্ঠান কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে এহসান কুফিয়ার নেতৃত্বে হাজারো মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ঠ (এসডিজি)বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সম্পর্কিত বিভাগীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত সরাইলে মাসব্যপি টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন বাহরাইন থেকে ৬৫ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন ফারুক বিপদে ৯০ বাংলাদেশি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত বাংলাদেশি যুবক: স্বপ্নভঙ্গের করুণ গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক :কুমিল্লা জেলা
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত বাংলাদেশি যুবক: স্বপ্নভঙ্গের করুণ গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক :কুমিল্লা জেলা

ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে, পরিবারের অভাব দূর করতে রাশিয়ার পথে পা বাড়িয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদ আকরাম হোসেন (২৫)। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সেনাবাহিনীর পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে প্রাণ হারালেন এই বাংলাদেশি যুবক।

যেভাবে রাশিয়ায় পৌঁছালেন আকরাম
আকরাম হোসেন আশুগঞ্জ উপজেলার হোসেনপুর গ্রামের দিনমজুর মোরশেদ মিয়ার ছেলে। সংসারের দারিদ্র্য কাটাতে প্রায় ১১ মাস আগে ধারদেনা করে রাশিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। প্রথমে একটি চীনা কোম্পানিতে ওয়েল্ডার হিসেবে কাজ করলেও সেখানে বেতন কম পাওয়ায় এক পর্যায়ে দালালের প্রলোভনে পড়েন। তাকে বলা হয়, রুশ সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক কাজ করলে বেশি বেতন ও নাগরিক সুবিধা পাওয়া যাবে। এই লোভে তিনি রুশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো হয়।

যুদ্ধে যাওয়ার আগের মুহূর্তগুলো
আকরাম যুদ্ধে যাওয়ার আগে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে রুশ সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরা বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, “এবার আর ফিরে আসা হবে না। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।” পরিবার তাকে বারবার ফিরে আসার অনুরোধ করলেও তিনি জানান, চুক্তির শর্তানুযায়ী তার ফেরার কোনো সুযোগ নেই।

মৃত্যুর মর্মান্তিক খবর
গত ১৩ এপ্রিল থেকে আকরামের সঙ্গে পরিবার ও রাশিয়ায় থাকা বাংলাদেশি সহযোদ্ধাদের সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর ১৮ এপ্রিল বিকেলে আকরামের এক সহযোদ্ধা পরিবারের সঙ্গে ফোন করে জানান, ইউক্রেনের একটি মিসাইল হামলায় আকরাম নিহত হয়েছেন। তার ইউনিটের আরও কয়েকজন সৈন্য একই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।

পরিবারের মর্মান্তিক প্রতিক্রিয়া
আকরামের মা মোবিনা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, “আমার ছেলের কণ্ঠ শুনি না অনেক দিন ধরে। এখন তো সে চিরদিনের জন্য চলে গেল।” পরিবারের সদস্যরা জানান, আকরাম সংসারের হাল ধরতে বিদেশ গিয়েছিলেন, কিন্তু ভাগ্য তার বিপরীত সাক্ষী দিল।

সরকারি পদক্ষেপ ও আনুষ্ঠানিকতা
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাফে মোহাম্মদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “পরিবারের কাছ থেকে খবর পেয়ে আমরা মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। রাশিয়া থেকে মরদেহ শনাক্ত ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহের পর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।”

বাংলাদেশিদের রাশিয়ায় যুদ্ধে যোগদানের প্রবণতা
গত কয়েক মাসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে যোগ দিতে গিয়ে বহু বাংলাদেশি নিহত বা আটক হয়েছেন। দালালদের প্ররোচনায় অনেকেই উচ্চ বেতন ও নাগরিকত্বের লোভে রুশ সেনাবাহিনীতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছেন। তবে বাংলাদেশ সরকার বারবার সতর্ক করে বলেছে, বিদেশে গিয়ে অবৈধভাবে যুদ্ধে অংশ নেওয়া আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

শোক ও সমবেদনা
আকরামের মৃত্যুতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসী শোক প্রকাশ করেছেন। তার বাবা মোরশেদ মিয়া বলেন, “আমার ছেলে সংসার চালাতে গিয়ে প্রাণ দিল। আমরা এখন অসহায়।”

এই ঘটনা বাংলাদেশিদের বিদেশে গিয়ে যুদ্ধে যোগ দেওয়ার ঝুঁকি ও করুণ পরিণতি আবারও উন্মোচন করেছে। আকরামের মতো অনেক যুবকের স্বপ্ন ভেসে যাচ্ছে যুদ্ধের অগ্নিসংযোগে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট