🏛️ কুমিল্লা: উপমহাদেশের ঐতিহ্যের জনপদ, বিভাগ চাই কুমিল্লা নামেই সাংবাদিক ও মানবাধিকার সংগঠক সেলিম রেজার বজ্রকন্ঠে কুমিল্লা বিভাগ চাই।
স্টাফ রিপোর্টার রাজু সরদার
উপমহাদেশের ঐতিহ্য ও গৌরবের জনপদ কুমিল্লা বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন জেলা। উপজেলাভিত্তিক সংখ্যায় এটি ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত জেলা। প্রায় ৬২ লক্ষ মানুষের বসবাস এই সমৃদ্ধ জনপদে। রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি কিংবা স্বাস্থ্য—সব ক্ষেত্রেই কুমিল্লা এগিয়ে।
কুমিল্লা জেলার মানুষ দেশ পরিচালনায় নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় নিয়োজিত—শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, ক্রীড়াবিদ, বিজ্ঞানী—সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অবদান অনন্য। একসময় কুমিল্লা ছিল “ব্যাংক আর ট্যাংকের শহর” নামে পরিচিত।
এখানে রয়েছে কুমিল্লা ইপিজেড, বিবিরবাজার স্থলবন্দর, কৃষি ও মৎস্য খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন। দাউদকান্দির প্লাবনভূমির মাছ আজ জাতীয় অর্থনীতিতে অসামান্য অবদান রাখছে। প্রবাসী কুমিল্লাবাসীর পাঠানো রেমিটেন্সও দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে।
কুমিল্লার খাঁদি, তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, কুটিরশিল্প ও ময়নামতির শীতলপাটি বিশ্বব্যাপী খ্যাত। এখানকার মাতৃভান্ডারের রসমালাই বাংলাদেশের ঐতিহ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মিত কোটবাড়ির শালবন বৌদ্ধবিহার, ময়নামতি জাদুঘর, লালমাই পাহাড়, বার্ড (বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি), কুমিল্লা সেনানিবাস, ওয়্যার সিমেট্রি, বিমানবন্দর, দীর্ঘ রেললাইন—সব মিলিয়ে কুমিল্লা ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক জীবন্ত নিদর্শন।
শিক্ষাক্ষেত্রেও কুমিল্লার অবদান অনন্য। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, ক্যাডেট কলেজ, ভিক্টোরিয়া কলেজ, সরকারি কলেজ, জিলা স্কুল, নবাব ফয়জুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয়সহ অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই জেলার গৌরব বহন করছে।
এ মাটিতে জন্ম নিয়েছেন নারী জাগরণের অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী, ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, সঙ্গীত সম্রাট শচীন দেব বর্মণ, পল্লী উন্নয়নের কারিগর ড. আখতার হামিদ খানসহ অসংখ্য গুণীজন।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম—প্রত্যেক ধাপে কুমিল্লাবাসীর অবদান ছিল অনস্বীকার্য।
তবু আজও বিভাগ হওয়ার মতো সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কুমিল্লা বারবার বঞ্চিত।
আমরা আর বঞ্চিত হতে চাই না — আমরা চাই বিভাগ, চাই কুমিল্লা নামেই!