“সংবাদ প্রকাশের পরও নীরব প্রশাসন: ধোপাজান নদীর বালু লুটে অটুট সিন্ডিকেটের প্রভাব”
স্টাফ রিপোর্টার শাআলী :রহমান
সুনামগঞ্জের ধোপাজান নদীর অবৈধ বালু ও পাথর উত্তোলনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরও প্রশাসনের নীরবতা নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ চরমে। জাতীয় দৈনিক ঘোষণায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটির পর আশা করা হয়েছিল দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন—সিন্ডিকেটের অবাধ
দৌরাত্ম্য এখনও অব্যাহত।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো অভিযানের তোয়াক্কা তো নেইই, উল্টো নদীর তীরে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলনের গতি বেড়েছে। রাতভর ট্রলি ও পিকআপে অবৈধ বালু লোড করে ভোরের আলো ফোটার আগেই সেগুলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। ক্রাশার মিলে এখনো অনেক বালু মজুদ কিন্তু প্রশাসন থেকে সেগুলো জব্দ করা হয় নি।
প্রথম প্রতিবেদনের পর সাংবাদিককে দেওয়া হুমকি কল নিয়ে এখনও কোনো তদন্ত শুরু হয়নি। স্থানীয়দের প্রশ্ন—কীভাবে ওসিকে ফোন দেওয়ার মাত্র আধঘণ্টা পর অনুসন্ধানকারীর ব্যক্তিগত নম্বর বালু সিন্ডিকেটের হাতে পৌঁছে গেল? এ নিয়ে সাধারণ মানুষ মনে করছেন, প্রশাসনিক স্তরের ভেতর থেকেই তথ্য ফাঁস হয়েছে।
হালুয়ারঘাটের এক বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বলেন,“সংবাদ প্রকাশের পর আমরা ভেবেছিলাম এবার বড় ধরনের অভিযান হবে। কিন্তু উল্টো নদীর বুকে এখন আরও বেশি ট্রলি ঢুকছে। এটি স্পষ্ট যে সিন্ডিকেটের পেছনে বড় প্রভাবশালী মহল রয়েছে।”
নদী ধ্বংসের ভয়াবহতা নিয়ে পরিবেশবিদরা বারবার সতর্ক করছেন যে এভাবে অবৈধভাবে বালু তোলা হলে ধোপাজান নদীর অস্তিত্ব চরম ঝুঁকির মুখে পড়বে। নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে আশপাশের কৃষিজমি ও জীববৈচিত্র্যের মারাত্মক ক্ষতি হবে।
প্রশ্নের মুখে প্রশাসন! স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসন যদি চাইত, এক রাতেই বালু লুট বন্ধ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু সংবাদ প্রকাশের পরও কোনো তৎপরতা না থাকায় সন্দেহ আরও গভীর হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সিন্ডিকেটকে রক্ষার জন্য প্রভাবশালী মহল নীরব ভূমিকায় রয়েছে।
ধোপাজান নদীর প্রাণ ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। কিন্তু প্রশাসনের নীরবতায় বালু সিন্ডিকেটের অদৃশ্য নেটওয়ার্ক যে আরও শক্তিশালী হচ্ছে, তা আর গোপন থাকছে না।