মোহনপুর উপজেলায় কেশরহাট পৌরসভার সাঁকোয়া গ্রামে রাস্তার বেহাল দশা: বাসিন্দাদের দুর্ভোগ, মেরামতের দাবি উঠছে জোরালো
মোঃ নাসিরউদ্দিন রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রাজশাহী, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বৃহস্পতিবার (মানবকন্ঠ প্রতিবেদক): রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের সাঁকোয়া গ্রামে রাস্তার অবনতিশীল অবস্থা সাধারণ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে, যানবাহন তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে যাতায়াতও ঝুঁকিপূর্ণ। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করছেন, রাস্তায় গর্ত এবং খানাখন্দের কারণে প্রয়োজনীয় মালামাল পরিবহন করা দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। এই সমস্যা দীর্ঘদিনের হলেও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বাসিন্দাদের ক্ষোভ বাড়ছে। গত কয়েক বছরে এই এলাকায় একাধিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা খারাপ রাস্তার সাথে সরাসরি যুক্ত।
সাঁকোয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল রহেদ (৫৫) বলেন, “আমাদের গ্রামের রাস্তা এমন অবস্থায় পড়েছে যে, অল্প পানিতেই পুরো এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। যানবাহন চলতে পারে না, ফলে চিকিৎসা বা বাজার করতে যাওয়া মুশকিল। পৌরসভা থেকে বারবার অনুরোধ করেও কোনো সাড়া পাই না।” তাঁর মতে, এই সমস্যা না সমাধান হলে গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে, কারণ কৃষকরা তাদের ফসল পরিবহন করতে পারছেন না।
কেশরহাট পৌরসভার দায়িত্বশীলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমরা সমস্যাটি সম্পর্কে অবগত। গত ডিসেম্বরে সাঁকোয়া বাকশৈল গোরস্থানের কাঁচা রাস্তা এবং হরিদাগাছির রাস্তার উদ্বোধন করা হয়েছে, কিন্তু পুরো এলাকায় মেরামতের জন্য আরও তহবিল দরকার, আমরা সরকারি সহায়তা চেয়েছি এবং শীঘ্রই কাজ শুরু করব।” তবে গ্রামবাসীরা বলছেন, এই প্রতিশ্রুতি অনেক দিনের, কিন্তু বাস্তবে কিছু হয়নি।
স্থানীয় সমাজসেবক রহিমা বেগম (৪২) অভিযোগ করেন, “শিশু-কিশোররা স্কুলে যাওয়ার সময় গর্তে পড়ে আহত হয়। জলাবদ্ধতার কারণে মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। পৌরসভাকে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাস্তা মেরামতের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জানা গেছে, মোহনপুর উপজেলায় রাস্তা উন্নয়নের জন্য বাজেট বরাদ্দ রয়েছে, কিন্তু বাস্তবায়ন ধীরগতির। গ্রামবাসীরা সবাইকে সচেতন হয়ে উঠতে এবং পৌরসভাকে চাপ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে এই এলাকার উন্নয়ন থমকে যাবে। সামাজিক সচেতনতা এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।