মানবাধিকার সংস্থার নাম করে প্রতারণা : বাংলাদেশে সক্রিয় আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্র! মুল হোতা :কাজী মাহমুদুল হাসান মাহমুদ।
উপশিরোনাম:
ফেসবুক পেজ, ভুয়া পরিচয়পত্র, সরকারি রেজিস্ট্রেশন নম্বর—সবই সাজানো। সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়ে যাচ্ছে প্রতারণার শিকার।
তারিখ: জুলাই ২০২৫
বিশেষ প্রতিবেদক: অমিত তালুকদার
পরিচিতি
বাংলাদেশে এমন এক প্রতারক চক্র সক্রিয়, যারা ‘জাতিসংঘ’, ‘মানবাধিকার কমিশন’ এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে অর্থের বিনিময়ে প্রতারণার শিকার করছে। ভুয়া সংস্থা ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের “জেলা মানবাধিকার প্রতিনিধি”, “সমন্বয়কারী” বা “মহাসচিব” বানানোর নাম করে ৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে।
প্রতারণার মূল সংস্থা ও চক্র
ভুয়া সংস্থার নাম Centre For Enforcement of Human Rights and Legal Aid (CEHRLA)। সরকারি নিবন্ধন নম্বর S-1934(110)/98 জাল করে তারা সক্রিয়।
চক্রের প্রধান নেতৃত্বে রয়েছে:
1. কাজী মাহামুদুল হাসান – নিজেকে চেয়ারম্যান দাবি করে, জাতিসংঘ মিশনে অংশগ্রহণের মিথ্যা দাবিও করেছেন।
প্রতারণার ধরন
চক্রটি নিম্নরূপ ভুয়া কার্যক্রম পরিচালনা করছে:
সরকারি রেজিস্ট্রেশন নম্বর S-1934(110)/98 অবৈধভাবে ব্যবহার।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কাউন্সিলের লোগো মুদ্রণ।
ভুয়া নিয়োগপত্র, সদস্যপদ ও সনদপত্র প্রদান।
চাকরির নিশ্চয়তার নামে অর্থ আদায়।
‘Anti-Corruption Team’, ‘Emergency Response Team’ ইত্যাদি নাম ব্যবহার।
প্রশাসনের পোশাক ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তার।
সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার
চক্রটি ফেসবুকের মাধ্যমে তার প্রতারণা ছড়িয়ে দিচ্ছে। মূল পেজ ও গ্রুপ:
আন্তর্জাতিক আইন সহায়তাকারী সংস্থা: facebook.com/share/16s2hVe2dS
সিলেট বিভাগীয় পেজ: facebook.com/share/1BxXE9eSx3
কিশোরগঞ্জ জেলা পেজ: facebook.com/share/1C91cxjefk
অন্যান্য ফেসবুক গ্রুপ: facebook.com/share/1EYXNvTfuB
ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, কেউ চাকরি আশায়, কেউ মানবাধিকার কাজের আগ্রহে যুক্ত হয়েছেন। পরে বিভিন্ন পদে ‘নিয়োগ’ দিয়ে অর্থ আদায় করা হয়েছে।
অমিত তালুকদার তাহিরপুর থানায় অভিযোগ
মাহমুদুল হাসান তাহিরপুর থানায় অভিযোগ
মোঃ জুসেল ঝিনাইদহ জিডি
মাহবুবুল আলম সবুজ চকরিয়া, কক্সবাজার জিডি
ইতোমধ্যে ৩৪টি সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে:
“মানবাধিকারকে ঢাল বানিয়ে যারা সাধারণ মানুষের অর্থ ও বিশ্বাস আত্মসাৎ করছে, তারা শুধু প্রতারক নয়—রাষ্ট্রবিরোধীও। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছি।”
অভিযোগ প্রমাণ করে, এই চক্র জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করছে এবং জনগণকে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
চক্রের মূল হোতারা এখনও সক্রিয়। সাধারণ জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে, এ ধরনের ভুয়া সংস্থার সাথে যুক্ত হলে আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। CEHRLA বলছে, যারা এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রকাশের জন্য বিশেষ মন্তব্য:
এই প্রতিবেদন পুরোপুরি অনুসন্ধানভিত্তিক এবং ফ্যাক্ট-চেক করা তথ্যের ওপর নির্ভর করছে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার নাম ব্যবহার করে যেকোনো প্রতারণা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য।