সিসি ক্যামেরা-গার্ড থাকার পরও একই দোকানে তিনবার চুরি: নিরাপত্তা ব্যর্থতা নাকি পরিকল্পিত অপারেশন?
স্টাফ রিপোর্টার: অমিত তালুকদার
সুনামগঞ্জ, বাদাঘাট বাজার থেকে
সিসি ক্যামেরা ও নিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী থাকার পরও বাদাঘাট বাজারের একই মোবাইল ফোনের দোকানে পরপর তিনবার দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যবসায়ী মহলে চরম উদ্বেগ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ জনগণ প্রশ্ন তুলেছেন—বাজারে স্থাপিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা আদৌ কার্যকর, নাকি পুরো ব্যবস্থাটিই লোক দেখানো?
চুরির শিকার দোকানের নাম “আদি টেলিকম”, যার মালিক জাকির আহমেদ জানান,
“প্রথম চুরির পরেই আমি বাজার কমিটি ও স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দেই। তখন শুধু আশ্বাসই দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় চুরির পরও কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার তৃতীয়বার আমার দোকানের সিলিং ভেঙে আবার মোবাইল চুরি হয়ে গেল—এটা ভাবলেই গায়ে কাঁটা দেয়। আমার জীবনের পুঁজি এখন হুমকির মুখে।”
তিনবারের চুরিতেই সিসিটিভি ক্যামেরা কাজ করেছে কিনা বা পাহারাদারদের দায়িত্বে কোনো গাফিলতি ছিল কি না—তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে একই দোকান লক্ষ্য করে বারবার চুরি হওয়াকে কেন্দ্র করে বাজার কমিটি, পাহারাদার ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর আস্থা হারাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
একজন স্থানীয় সচেতন নাগরিক বলেন—
“বাজারে রাতভর পাহারাদার থাকে, সিসিটিভি রয়েছে। তার পরও একই দোকানে তিনবার চুরি? বিষয়টি স্পষ্টতই অস্বাভাবিক। মনে হচ্ছে, কোনো প্রভাবশালী চক্র এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং কেউ না কেউ ম্যানেজ হয়ে আছে। একটি নিরপেক্ষ তদন্তেই সব সত্য বেরিয়ে আসবে।”
ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক জাকির আহমেদ প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন,
“আমার মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পক্ষে একের পর এক ক্ষতি সহ্য করা অসম্ভব। আমি চাই—একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হোক, এবং যারা দায়ী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। পাশাপাশি আমার ক্ষয়ক্ষতির যথাযথ ক্ষতিপূরণ চাই।”
তদন্ত দাবি উঠেছে
ঘটনার পর বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেকেই বলছেন, চুরি শুধু নয়—এ যেন একটি পরিকল্পিত হামলা স্থানীয় ব্যবসা পরিবেশের ওপর। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, বাজার কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।
এই রিপোর্ট প্রকাশের উদ্দেশ্য শুধু একটি দোকানের চুরি নয়, বরং বাজারের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় প্রয়োজন একটি গভীর তদন্ত ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা।