কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জামালপুর টেকনিক্যাল স্কুল ভবন নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ
নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ও নিয়ম না মেনে বিল সইয়ের অভিযোগে এলাকাবাসীর অসন্তোষ
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি আল আমিন
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার জামালপুর টেকনিক্যাল হাইস্কুলের নতুন ভবন নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নির্মাণকাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে এবং নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করা হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দারা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলে বর্তমানে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। নতুন ভবনের নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে কুমিল্লা উত্তরার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স সৈকত এন্টারপ্রাইজ’। মূল ঠিকাদার মোঃ আঃ রউফ এবং কুমিল্লার সাব-কন্ট্রাকটর সাইদুল ইসলামের মাধ্যমে ২য় ও ৩য় তলার নির্মাণকাজ চলছে। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ২৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
নির্মাণ কাজের অনিয়ম সম্পর্কে ভৈরব উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রেদুয়ান হোসেন বলেন, “আমি কিছু সময় বাড়িতে থাকার কারণে কাজের তদারকি করতে পারিনি। পরবর্তীতে দেখি সেগুন কাঠের পরিবর্তে মেহগনি কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। আমি সংশ্লিষ্টদের এসব পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছি এবং কন্ট্রাক্টর সিডিউলের বাইরে যেসব কাজ হয়েছে তা নতুন করে সংশোধনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রিয়াদ হোসেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন, “নির্মাণকাজে অনেক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। আমাকে অবগত না করেই প্রধান শিক্ষক বিল ভাউচারে সই করেছেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়।”
শিবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহ আলম প্রধান বলেন, “দরজা-চৌকাঠে সেগুন কাঠের বদলে মেহগনি কাঠ ও নিম্নমানের গ্লাসসহ অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া কাজ শেষ না হওয়ায় পরও প্রধান শিক্ষক বিল ভাউচারে স্বাক্ষর করেছেন, যা কমিটিকে না জানিয়েই করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আঃ হাকিম বলেন, “আমি নির্মাণ বিষয়ে তেমন অভিজ্ঞ নই। কন্ট্রাক্টর ও ইঞ্জিনিয়ারের অনুরোধে জুন ক্লোজিং হওয়ায় এবং সাত দিনের মধ্যে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে বিলে স্বাক্ষর করি।”
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদার মোঃ আঃ রউফ বলেন, “কিছু ভুল হয়েছে, তবে তা কয়েক দিনের মধ্যে সংশোধন করে দেওয়া হবে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ ও অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে ভবনের নির্মাণকাজ পরিদর্শনের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।