আসন পর্যালোচনা
বাগেরহাট—০৩ (রামপাল-মোংলা)
একজন যোগ্য প্রার্থী একটি সংসদীয় আসনের জয় কীভাবে ছিনিয়ে আনতে পারে, তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হতে যাচ্ছেন বাগেরহাট—৩ আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাই।
বিনয়ের সাথে সবসময় বলার চেষ্টা করি, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংগঠন সর্বোচ্চটুকু দিয়ে মনোনীত প্রার্থীর বিজয়ের চেষ্টা করবে। কিন্তু প্রার্থী যখন কেবলই সংগঠনের দিকে তাকিয়ে থেকে নির্বাচনী তরী পাড়ি দেওয়ার কোশেশ করে, তখন বিজয়টা কঠিন হয়ে যায়।
শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাই এমন একটা জায়গায় নমিনেশন পেয়েছেন, সাদা চোখে সেখানে নির্বাচন করা খুবই কঠিন। সাদা সোনা বলে খ্যাত বাগদা চিংড়ি চাষের বিধৌত, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বন্দর নগরী রামপাল ও মোংলা ইসলামপন্থী রাজনীতির জন্য কঠিন এক কন্সটিউন্সি। স্বাধীনতার পর থেকেই ঐতিহাসিকভাবে এই আসনে কেবল আওয়ামী পরিবার থেকে কুবের চন্দ্র, তালুকদার আবদুল খালেক এবং আফতাব উদ্দীন জিতেছেন। ১৯৯১ থেকে ২০২৪ শের বিপ্লবের আগ পর্যন্ত আবদুল খালেক এখানে শাসন করেছেন। জামায়াত এককভাবে সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে এই আসনে নির্বাচন করে এবং জামায়াত মনোনীত প্রার্থী শহিদ মাওলানা গাজী আবু বকর সিদ্দিক র: দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করে পরাজিত হন।
আসন্ন নির্বাচনে এই কঠিন এলাকায় আবদুল ওয়াদুদ ভাই নির্বাচন করবেন। ফলাফল কেমন হবে, তা দেখার অগ্রিম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখছি৷
কী করছেন/করেছেন শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাই আসলে?
সেই ২০০৪ সাল সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে শহীদ মাওলানা গাজী আবু বকর সিদ্দিক র: শহীদ হওয়ার পর থেকেই অবিরাম ছুটে চলছেন রামপাল ও মোংলার আনাচে কানাচে, অলিতে-গলিতে প্রত্যেকটি জনপদের এই মাটিতে। আদালতের সিনিয়র আইনজীবী শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাই সময় পাইলে প্রত্যেক দিন, এছাড়াও প্রতি বৃহস্পতিবার তার নির্বাচনী এলাকায় চলে যাচ্ছেন। শুক্রবার ও শনিবার দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন দুই উপজেলায়। প্রত্যেকটি জানাজায় তিনি উপস্থিত থাকছেন দেখছেন না কে কোন দলের। চ্যালেঞ্জ করে বলা যেতে পারে তার মত এত বেশি রামপাল মোংলায় কেহ আগমন বা অবস্থান করেন না।
হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় সম্মানিত হিন্দু নাগরিকদের জন্য তাদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন হামেশাই।
তরুণদের কানেক্ট করছেন ফুটবল মাঠে, বিভিন্ন প্রোগ্রামে।
গ্রামের উন্নয়ন বঞ্চিত নাগরিকদের নিজ অর্থায়নে, সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক সেবা দিচ্ছেন। অসহায়দের ঘর, রোগীর চিকিৎসা সেবা, মসজিদ, উজুখানা, রাস্তাঘাট মেরামত, আইনী সেবাসহ অসংখ্য সহযোগিতা করে সাধারণ মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে।
স্যুটেড-বুটেড, আলেম হয়ে শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাই এলাকায় গিয়ে গ্রামীণ পোষাক পরে হাঁটছেন, সাধারণ পোশাক পরে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছেন।
মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে, শিক্ষার্থীদের সময় দিচ্ছেন।
সাংগঠনিক বৈঠকের পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন।
এলাকার বাইরে গিয়ে রামপাল ও মোংলার লোকজন খুঁজে বের করছেন, সাক্ষাৎ করছেন, মতবিনিময় করছেন।
অ্যাডভোকেট মাওলানা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাইকে আল্লাহ তায়ালা উপার্জনের সক্ষমতা দিয়েছেন। আদালতে পেশাদার উপার্জন করে নিজ সংসদীয় আসনে গিয়ে খরচ করছেন। বহু মানুষ প্রচুর উপার্জন করে, কিন্তু ক'জনই খরচ করার হিম্মত রাখেন?
কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী তার পেশাদার জীবনের হেভি ট্র্যাফিক এড়িয়ে অবিরত গ্রামের মানুষদের সাথে কানেক্ট হচ্ছেন। রামপাল -মোংলার মানুষ অনুভব করছেন, তাদের এক সন্তান খ্যাতিমান আইনজীবী। তাদের সন্তান আইন অঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। উচ্চ শিক্ষিত সন্তান সুযোগ করে তাদের বুকে ছুটে আসছে।
এটা বিরাট ব্যাপার! এই অভিজ্ঞতা আসলে লিখে বুঝানো কঠিন!
জয়-পরাজয় রাব্বুল আলামিনের হাতে। তবে অ্যাডভোকেট মাওলানা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাই একটা মডেল সেট করতে যাচ্ছেন, এটা নিশ্চিত।
মরুভূমির বুকে গাছ লাগানোর আয়োজন চলছে। পাথরের বুকে ফুল ফুটানোর উদ্যোগ চলছে।
গণরাজনীতির এক নতুন পাঠের আনুষ্ঠানিক প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস চলছে রামপাল - মোংলার মাটিতে৷
একটা নিস্প্রভ সংসদীয় আসনকে সজীব করে তুলেছেনঅ্যাডভোকেট মাওলানা শেখ আব্দুল ওয়াদুদ ভাই।
টার্গেটের পিন পয়েন্টের অনেক দূরে অবস্থান করা একটা সংসদীয় আসন ইনশাআল্লাহ খুব সম্ভবত জামায়াতের ঝুলিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে৷
ইসলামপন্থী গণরাজনীতির বোঝাপড়ায় একটা নতুন বোধ ও উপলব্ধির মুখোমুখি করবে বাগেরহাট — ৩ আসন, এ আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।