রাজশাহী তানোরে পাকা রাস্তা, কাঁদা মাটিতে রুপান্তর,ঝুঁকি নিয়ে চলফেরা
মোঃ নাসির উদ্দিন রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি
রাস্তাটি পাকা, কিন্তু পুকুর খননের মাটি বিক্রি করার কারনে প্রায় এক দেড় কিলোমিটার রাস্তা একেবারে পুকুরের কাঁদা মাটিতে ভরে গেছে, কোন ধরনের যানবহন চলা তো দূরে থাক স্যান্ডেল বা জুতা খুলে হেটে চলাচল করতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।
পুরাতন পুকুর সংস্কারের নামে কাদা মাটি বহন বা বিক্রি করার কারনে রাস্তার বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়ে আছে। আবার গত কয়েকদিন ধরে দিন রাত ভারী ও মাঝারি বৃষ্টি হতেই আছে। রাজশাহীর তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়ন ইউপির কাঁচারিপাড়া গ্রামে ঘটে রয়েছে এমন ঘটনা।
পুকুর মালিক সার কীটনাশক ব্যবসায়ী মুকুলসহ পুকুরের অংশিদারদের খাম খেয়ালীতে পুরো গ্রামের জনসাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। আবার সেই কাঁদা মাটি কোদাল দিয়ে পরিস্কার করার কারনে রাস্তার খোয়া পাথর উঠে যাচ্ছে। এতে করে পুকুর মালিক দের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি তুলেছেন গ্রামবাসী।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরনজাই বাজারে যাওয়ার আগেই মুল রাস্তার দক্ষিণে কাঁচারিপাড়া। গ্রামের মাঝে পাকা রাস্তা ঘেষে পুকুর। পুকুরের দক্ষিণ দিকে গাছ কাটা আছে এবং ভেকু মেশিন বন্ধ অবস্থায় ছিল। মাটি বহনকারী দুটি ট্যাক্টর রাস্তায় দাঁড় করানো আছে। ট্যাক্টরে করে পুকুরের কাঁদা মাটি বহন করার সময় রাস্তায় ব্যাপক হারে মাটি পড়ে রয়েছে।
একজন শ্রমিক সেই কাঁদা মাটি কোদাল দিয়ে পরিস্কার করছে। কোদাল দিয়ে পরিস্কার করার কারনে রাস্তার খোয়া পাথর উঠে যাচ্ছে। ওই সময় শুরু হয় ভারি বৃষ্টি। কয়েকজন ব্যক্তি স্যান্ডেল হাতে নিয়ে খালি পায়ে হেটে যাচ্ছে। সেখানে গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি জানান, এখন বর্ষা মৌসুম।
এসময় পুকুর খনন করে মাটি বহন করা সঠিক কাজ না। রাস্তার যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাতে করে চলাচল করায় কষ্টকর ব্যাপার। এখানেই শেষ না মাটি বহনের কারনে রাস্তা বসে গেছে। গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে ট্যাক্টর চালিয়ে সটকে পড়ে চালকরা।
বেশকিছু ব্যক্তিরা বলেন, মুকুল একজন কীটনাশক ও সার ব্যবসায়ী। তারা গ্রামের প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। এজন্য কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে দেদারসে কাঁদা মাটি বহন করার কারনে পাকা রাস্তা চরম ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে। এসব কাঁদা মাটি কোনভাবেই রাস্তা থেকে বের করা যাবেনা। বৃষ্টি হওয়ার কারনে পিচ্ছিল হয়ে পড়েছে পুরো রাস্তা।
এক মোটরসাইকেল চালক জানান, সকালে দেখলাম রাস্তায় কোন মাটি ছিল না। কিন্তু দুপুরের দিকে আর মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। আলুর জমিতে চলছে পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই। রাস্তায় কাঁদা মাটি পড়ে থাকার কারনে বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে কৃষক দের।
ওই ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল ইসলাম কে বিষয় টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি জানান ঘটনাস্থল দেখে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলা হবে। পুকুর মালিক মুকুলের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে তিনি জানান রং নম্বর বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক খানের মোবাইলে ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
তহসিলদার তানভীর আহমেদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে বিষয় টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি জানান ঘটনাস্থলে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিয়াকত সালমান জানান, দ্রুত লোক পাঠিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।