1. shahinsalman99@gmail.com : দৈনিক আজকের জনতার কথা : দৈনিক আজকের জনতার কথা
  2. info@www.dainikajkerjanatarkotha.online : দৈনিক আজকের জনতার কথা :
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব জনাব জাহারুল ইসলাম জীবনের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বাণীঃ দেশ ও দেশের প্রবাসী সকল ভাই- বোনদেন প্রতি পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন ” আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ শাহীন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব জনাব জাহারুল ইসলাম জীবনের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বাণীঃ- ” প্রিয়, দেশ ও দেশের বাহিরের সকলের প্রতি রহিল অগ্রিম ঈদুল আজহার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন “-** ঈদ মোবারক** মানবাধিকার সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মাওলা পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন খুলনা বিভাগ সহ মংলা রামপাল বাসীকে। পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশবাসী ও প্রবাসী ভাই ও বোনদের ” ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার সিনিয়র:ভাইস -চেয়ারম্যান শেখ শাহীন বোমা হামলা চাঁদাবাজি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিএনপির মতবিনিময় সভা পাকুন্দিয়ায় বাসচাপায় হাফেজ সারোয়ার নিহত ★ঈদ মোবারক!-ঈদুল আজহা’র বিশেষ অগ্রিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা★ আগামীকাল পবিত্র ঈদুল আজহাঃ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত আত্মশুদ্ধি ও ভ্রাতৃত্ববোধে সামাজিক সংহতি ! বাগুর, নবিয়াবাদ ও জাফরাবাদে অপরাধ নির্মূলে গুণীজনদের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়

সবুজ পৃথিবীর আহ্বান: বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও মানবিক দায়বোধের নতুন মানচিত্র

আব্বাস উদ্দিন:বার্তা সম্পাদক
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

সবুজ পৃথিবীর আহ্বান: বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও মানবিক দায়বোধের নতুন মানচিত্র।

আব্বাস উদ্দিন:বার্তা সম্পাদক

পরিবেশের উপর সচেতনতা মূলক অসামান্য লিখনী :

জনাব মো: মোশারফ হোসাইন
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,সরাইল
ব্রাহ্মণবাড়িয়া।

প্রতিটি নতুন দিন শুরু হয় সূর্যোদয়ের আলোয়, পাখির কূজন আর বাতাসের মৃদু স্পর্শে। কিন্তু এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যে আজ হুমকির মুখে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। অরণ্য নিধন, জলবায়ু পরিবর্তন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং, প্লাস্টিক দূষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ—সব মিলিয়ে পৃথিবীর ভারসাম্য আজ বিপর্যস্ত। এই সংকটময় পরিস্থিতির মধ্যেই প্রতিবছর ৫ জুন পালিত হয় বিশ্ব পরিবেশ দিবস (World Environment Day)। এটি শুধুমাত্র একটি দিন নয়, বরং এক বৈশ্বিক প্রতিবেদন, যেখানে মানবজাতিকে পরিবেশ রক্ষায় নিজেদের ভূমিকা নিয়ে চিন্তা করতে বাধ্য করা হয়।

“Environment is the sum total of all external conditions and influences that affect the life and development of organisms.” অর্থাৎ, পরিবেশ হল সেই সামগ্রিক বহিঃস্থ উপাদান ও প্রভাবসমূহের সমষ্টি যা জীবের জীবন ও বিকাশে প্রভাব ফেলে। এই সংজ্ঞা থেকেই বোঝা যায়, পরিবেশ আমাদের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি কেবল গাছপালা, নদী, পাহাড় কিংবা প্রাণিজগতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক বাস্তবতা।
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, ১৯৭২ সালে সুইডেনের স্টকহোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের মানব পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলনে (United Nations Conference on the Human Environment) ৫ জুনকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এটি ছিল জাতিসংঘের পরিবেশ নিয়ে প্রথম বড় ধরনের সম্মেলন। ১৯৭৪ সালে দিবসটি প্রথম পালিত হয় ‘Only One Earth’ প্রতিপাদ্য নিয়ে। তখন থেকেই এই দিনটি বিশ্বজুড়ে পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো- পরিবেশ দূষণের কারণ চিহ্নিত করা, নীতি-নির্ধারণে গুরুত্বারোপ, প্রতিরোধের উপায় নিরূপণ করাসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সক্রিয়তা বাড়াতে কাজ করা।

প্রতিবছর একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য নির্ধারণের মাধ্যমে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট পরিবেশগত সমস্যাকে সামনে এনে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা। যেমন ২০১8 সালে প্রতিপাদ্য ছিল “Beat Plastic Pollution”, ২০১৯ সালে “Beat Air Pollution”, ২০২০ সালে “Time for Nature”, ২০২১ সালে “Ecosystem Restoration”, ২০২২ সালে আবার ফিরে আসে ১৯৭৪ সালের সেই বিখ্যাত শ্লোগান “Only One Earth”। ২০২৪ সালে সৌদি আরবের আয়োজনে প্রতিপাদ্য ছিল “Land Restoration, Desertification and Drought Resilience”, যা জলাভূমি, মরুভূমি, শুষ্ক অঞ্চল এবং ভূমির পুনরুদ্ধারকে অগ্রাধিকার দেয়। দিবসটির ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য- ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়’ এবং স্লোগান হচ্ছে- ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়’।

আমাদের চারপাশে তাকালেই দেখা যায় পরিবেশ দূষণ ও বিনাশ কীভাবে মানবজীবনকে প্রভাবিত করছে। ঢাকা, দিল্লি, বেইজিং, লাহোর কিংবা মেক্সিকো সিটি—এই শহরগুলোর বাতাসে শ্বাস নেওয়া যেন প্রতিনিয়ত বিষ গ্রহণ করার সমান। বাংলাদেশে পদ্মা-মেঘনার তীরবর্তী এলাকা, সুন্দরবনের প্রান্তিক অঞ্চল, পার্বত্য চট্টগ্রামের জুম চাষভিত্তিক বন উজাড় এবং নদী ভাঙনের কবলে পড়া অসংখ্য জনগোষ্ঠী—সবই এখন পরিবেশগত সংকটের শিকার। বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, অতিবৃষ্টি ও খরার প্রভাবে বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিও হুমকির মুখে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী অবস্থাটিও খুব একটা আলাদা নয়। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর কারণে হিমবাহ গলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে, জলবায়ুর স্বাভাবিক ধারা ভেঙে যাচ্ছে। অতীতে যে ঋতুতে বৃষ্টি হতো এখন সে ঋতুতে খরা দেখা দিচ্ছে, বরফের দেশগুলোতে অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল, দক্ষিণ আমেরিকার অ্যামাজন বনাঞ্চল, অস্ট্রেলিয়ার বুশফায়ার এলাকা কিংবা ইন্দোনেশিয়ার মাটির ক্ষয়—সবই এই বৈশ্বিক পরিবেশ সংকটের প্রকাশ।

জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি UNEP (United Nations Environment Programme) বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের মূল সংগঠক। ১৯৭২ সালে এটি গঠিত হয় এবং নাইরোবি, কেনিয়ায় এর প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। UNEP এর ভূমিকা শুধু দিবস পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি বৈশ্বিক পর্যায়ে নীতিমালা নির্ধারণ, তথ্য বিশ্লেষণ, গবেষণা, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রযুক্তি সহায়তা প্রদান এবং পরিবেশগত সুশাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশ্ব পরিবেশ দিবসে যে বার্তাটি সবচেয়ে গুরুত্ব পায় তা হলো—“ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র পর্যায়ে পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন।” শুধু সরকার কিংবা সংস্থাগুলোর ওপর দায় চাপালে চলবে না; বরং প্রতিটি নাগরিককেই পরিবেশবান্ধব জীবনধারা গ্রহণ করতে হবে। প্লাস্টিকের পরিবর্তে কাপড় বা পাটের ব্যাগ ব্যবহার, পানি ও বিদ্যুৎ অপচয় না করা, গাছ রোপণ করা, সাইকেল বা গণপরিবহন ব্যবহার, নিজের শহর-গ্রাম পরিষ্কার রাখা ইত্যাদি ছোট ছোট কাজের মাধ্যমেই পরিবেশ রক্ষা সম্ভব। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের তাৎপর্য কেবল একদিনের আনুষ্ঠানিকতা নয়। এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক আন্দোলন। একে কেন্দ্র করে সারা পৃথিবীতে র্যালি, সেমিনার, পোস্টার প্রদর্শনী, বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ পরিচ্ছন্নতা অভিযান, স্কুল-কলেজে পরিবেশবিষয়ক প্রতিযোগিতা এবং গণমাধ্যমে বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশেও পরিবেশ অধিদপ্তর, বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এবং নাগরিক সমাজ দিবসটি পালন করে থাকে।

বিশ্বের পরিবেশ চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দক্ষিণ এশিয়া, সাব-সাহারান আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশ পরিবেশ সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু দূষণের প্রধান উৎস হল উন্নত বিশ্ব, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতের কিছু অঞ্চল। এখানেই দেখা দেয় পরিবেশগত ন্যায়বিচারের প্রশ্ন। যেসব দেশ কম দূষণ করে, তারাই সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছে। তাই বৈশ্বিক সহমর্মিতা, দায়িত্ব ভাগাভাগি এবং প্রযুক্তি ও অর্থায়নে সমতা আনাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে অর্থনীতি ও উন্নয়ন। উন্নয়নের নামে যদি পরিবেশ ধ্বংস হয়, তবে সেটি টেকসই হতে পারে না। এজন্য ‘টেকসই উন্নয়ন’ (Sustainable Development) ধারণা সামনে আসে, যার মূল লক্ষ্য পরিবেশ, সমাজ ও অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা। জাতিসংঘ ২০১৫ সালে গৃহীত ১৭টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDGs)-এর মধ্যে বেশ কয়েকটিই পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট, যেমন:

লক্ষ্য ১৩: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা

লক্ষ্য ১৪: সাগর, সমুদ্র ও সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণ

লক্ষ্য ১৫: স্থলজ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

লক্ষ্য ৬: নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করা

এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে সকল দেশকে একযোগে কাজ করতে হবে, নতুবা পৃথিবী হবে বসবাসের অযোগ্য।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে যেমন: পরিবেশবান্ধব শিল্পনীতি গ্রহণ, প্লাস্টিক উৎপাদনে কড়াকড়ি, নদী খনন ও সংরক্ষণ, বনায়ন কার্যক্রম জোরদার, নগর পরিকল্পনায় পরিবেশগত দিক বিবেচনা করা, পরিবেশ আইন প্রয়োগে কঠোরতা বৃদ্ধি, স্কুল-কলেজে পরিবেশ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা ইত্যাদি। একইসাথে জনগণকে সচেতন করতে গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় সরকারকে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—আমরা প্রকৃতির অংশ, প্রভু নই। আমরা যদি প্রকৃতিকে ধ্বংস করি, প্রকৃতিও আমাদের ছেড়ে কথা বলবে না। অতএব, আমাদের নিজেদের জীবনযাপন, শিল্প-কারখানা, কৃষি, নগর উন্নয়ন, যানবাহন ও প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিবেশ-সচেতন হতে হবে। এই পৃথিবী একটাই। এই পৃথিবীই আমাদের ভবিষ্যৎ। বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আহ্বান তাই একটাই—সবুজ পৃথিবী গড়ে তোলার আন্দোলনে সবাইকে যুক্ত হতে হবে। গাছ লাগাতে হবে, নদী বাঁচাতে হবে, প্রাণীদের রক্ষা করতে হবে, নিজেকে বদলাতে হবে। তবেই পৃথিবী তার চিরচেনা রূপে ফিরে আসবে। আর আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পাবে একটি বাসযোগ্য পৃথিবী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট