বীমা খাতে অনিয়ম, অর্থপাচার ও সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় বিএম ইউসুফ আলী
বিশেষ প্রতিনিধি: রোকেয়া খাতুন
বীমা খাতে দুর্নীতি, অর্থপাচার এবং রাজনৈতিক সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলোচনায় রয়েছেন পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা বিএম ইউসুফ আলী। বিভিন্ন সূত্র ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে রাজধানীর একাধিক থানায় হত্যা, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খুন, সহিংসতা এবং আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রায় ২৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিএম ইউসুফ আলীসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।
অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা সরাসরি সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। আন্দোলন দমনে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন ও মিরপুর থানায় দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়।
মামলা সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী:
ডিএমপি পল্টন থানার মামলা নং-২৬, তারিখ-১৬ মার্চ ২০২৫:
এই মামলায় বিএম ইউসুফ আলীকে “রাজনৈতিক খুনে” অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহকারী হিসেবে আসামি করা হয়েছে। তার পরিবারের আরও তিন সদস্য—ছোট ভাই বিএম শওকত আলী এবং দুই ছেলে মাহমুদুল হাসান ইমন ও মেহেদি হাসান নাহিদ—এই মামলার অভিযুক্ত।
ডিএমপি মিরপুর মডেল থানার মামলা নং-৩৮, তারিখ-২০ এপ্রিল ২০২৫:
দাঙ্গা, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে খুন ও সহিংসতার পরিকল্পনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এই মামলায় বিএম ইউসুফ আলী ও তার ভাইয়ের নাম রয়েছে।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্র জানায়, বীমা আইন ২০১০-এর ধারা ৭৫ লঙ্ঘনের কারণে বিএম ইউসুফ আলীকে এনআরবি ইসলামিক লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পরিচালক পদ থেকে অপসারণ সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছে।
তবে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও এখনো তিনি প্রকাশ্যে রাজধানীর দিলকুশায় পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি করেছে বিভিন্ন সুশীল সমাজ সংগঠন। অভিযোগ রয়েছে, তার দুই ছেলে ইতোমধ্যে দেশ ছেড়েছেন।
এ বিষয়ে বিএম ইউসুফ আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।