ছাত্রলীগ নেতা অন্তর অপহরণের পর উদ্ধার: মুক্তিপণ নিয়েও ফেরত দেয়নি অপহরণকারীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক : মো: সেলিম রানা
গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগ নেতা অন্তরকে অপহরণের একদিন পর হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। ভয়াবহ এ ঘটনার পেছনে ছিলো একটি সন্ত্রাসী চক্র, যাদের সঙ্গে রাজনৈতিক শিবির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ২৮ মে রাত ৯টার দিকে গাজীপুরের মাউনা চৌরাস্তা থেকে ৩০-৪০ জনের একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দল অন্তরকে জনসম্মুখেই অপহরণ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অপহরণকারীরা চিৎকার করে বলছিল, “হাসনাত আব্দুল্লাহর উপর হামলার প্রতিশোধ নিচ্ছি”, “আওয়ামী লীগের দোসরকে ধরেছি।” সেসময় তারা ৮-১০টি মোটরসাইকেল ও কয়েকটি অটোরিকশায় করে অন্তরকে নিয়ে যায় ইয়াকুব আলি মার্কেটের পেছনে একটি ফাঁকা মাঠে।
পরিবার ও বন্ধুবান্ধবরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান, তবে অন্তরকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এরপর শুরু হয় মুক্তিপণ দাবির নাটক। অন্তরের ফোন থেকে পরিবারের কাছে ৩০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। ফোনে শোনা যাচ্ছিল অন্তরের আর্তনাদ ও মারধরের শব্দ। প্রথমে দুই লাখ টাকা নিয়ে গেলে অপহরণকারীরা আইফোনের বক্সও দাবি করে। বক্সসহ টাকা বুঝে নিয়েও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ফোন বন্ধ করে দেয় তারা।
রাত ৪টায় আবার ফোন করে বলে, “৩০ লাখ না হোক, অন্তত ১০ লাখ টাকার নিচে অন্তরকে ছাড়বো না। টাকা না দিলে লাশ নিয়ে যাবেন।” এরপর সকালে আরও ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে গেলে অপহরণকারীরা টাকা নিলেও অন্তরকে ফেরত দেয়নি।
অন্তরের স্ত্রীর কান্না এবং অনুনয়-বিনয়ও সন্ত্রাসীদের মন গলাতে পারেনি। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।
সবশেষে আজ ২৯ মে রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে টানা বৃষ্টির মধ্যে অন্তরকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রশাসনের নীরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সাধারণ মানুষ।
এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ ও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন অন্তরের পরিবার ও স্থানীয়রা।