সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ কর্তৃক ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উৎঘাটন ও ঘটনার সহিত জড়িত ০২ জন আসামীকে গ্রেফতার
মোঃ কাওছার হোসেন নয়ন (ক্রাইম রিপোর্টার,সিরাজগঞ্জ )
ডিসিষ্ট হোসেন খাঁ ওরফে আরাফাত খাঁন(৩৫), পিতা-মোহাম্মদ হানিফ, স্ত্রী-মোছাঃ শাপলা খাতুন, সাং-আলিপুর পাকিস্তানপাড়া, থানা-কোতোয়ালী, জেলা-ফরিদপুর বর্তমান ঠিকানা-সলংগা থানাধীন রাধানগর গ্রামস্থজনৈক মোঃ আলাউদ্দিন এর ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে এবং সলংগা থানাধীন চড়িয়া শিকার গ্রামস্থ র্যা ব-১২ এর সামনে সিল্কসিটি হোটেলে ও তার স্ত্রী মোছাঃ শাপলা খাতুন পাবনা রোডে জনৈক মোঃ শহিদুল ইসলাম এর হোটেলে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। গত ২২/০৫/২০২৫ খ্রিঃ রাত্রী অনুমান ২০.৩০ ঘটিকার সময় রাতের খাওয়া শেষে কাজের কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। অতঃপর বাসায় ফিরে না আসলে তার স্ত্রী ফোন করলে নাম্বার বন্ধ পায়। গত ২৩/০৫/২০২৫ খ্রিঃ ভোর হলেও ডিসিষ্ট বাড়ী ফিরে না আসায় তার স্ত্রী বিভিন্ন জায়গাসহ আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাড়ীতে খোঁজাখুঁজি করেন। ডিসিষ্টের স্ত্রী খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে একই তারিখ সকাল অনুমান ০৬.০০ ঘটিকার সময় লোকমুখে জানতে পারেন যে, সলংগা থানাধীন হাটিকুমরুল গোলচত্ত্বরস্থ রোড এন্ড হাইওয়ের পরিত্যাক্ত রেষ্টহাউজ এর বাউন্ডারী ওয়ালের পিছনে পরিত্যাক্ত জায়গায় রক্তাক্ত গুরুতর জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় একটি লাশ পরে আছে। তখন ডিসিষ্টের স্ত্রী মোছাঃ শাপলা খাতুন ঘটনাস্থলে গিয়ে ডিসিষ্ট হোসেন খাঁ ওরফে আরাফাত খাঁন এর মৃত দেহ দেখে সনাক্ত করেন। ডিসিষ্ট হোসেন খাঁ ওরফে আরাফাত খাঁনকে অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারী/দুস্কৃতিকারীরা ইট ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মুখমন্ডল থেতলানোসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর আঘাত দেখতে পান। এ সংক্রান্তে ডিসিষ্টের স্ত্রী মোছাঃ শাপলা খাতুন বাদী হয়ে সলংগা থানায় একটি নিয়মিত হত্যা মামলা দায়ের করেন।
সিরাজগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব ফারুক হোসেন মহোদয় নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে জনাব মোঃ জিয়াউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এ্যান্ড অপস্) এর নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, সিরাজগঞ্জ সার্কেল জনাব মোঃ নাজরান রউফ (অতিরিক্ত দায়িত্বে রায়গঞ্জ সার্কেল) ও জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ জনাব মোঃ একরামুল হোসাইন, পিপিএম এর তত্বাবধানে ডিবির এসআই(নিঃ)/অনুপ কুমার সরকার, এসআই(নিঃ)/মোঃ জাকারিয়া আল জারজীস, জেলা গোয়েন্দা শাখা, সিরাজগঞ্জগণদের সমন্বয়ে একটি চৌকস টিম গঠন করেন। চৌকস এই টিম তথ্য প্রযুক্তি ও নিখুঁত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিকতার কারণে হত্যাকান্ড সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ ঘটনার সাথে জড়িত আসামীকে সনাক্তপূর্বক আসামী ১। মোঃ ফিরোজ(২১), পিতা-মোঃ আলম শেখ, স্থায়ী সাং-মন্ডলপাড়া(বাইমোলা), চান্দাইকোনা, থানা-রায়গঞ্জ, জেলা-সিরাজগঞ্জ, এ/পি-রাধানগর(পুরাতন ফুড ভিলেজের পিছনে), থানা-সলংগা, জেলা-সিরাজগঞ্জ ও ২। মোছাঃ জুলেখা খাতুন(২১), পিতা-মোঃ সামছুল হক, স্থায়ী সাং-তারুটিয়া উত্তরপাড়া, থানা-সলংগা, জেলা-সিরাজগঞ্জ এ/পি-সাং-দত্তকুশা বুড়িরবাড়ী (রহম আলীর বাড়ীর ভাড়াটিয়া), থানা-সলংগা, জেলা-সিরাজগঞ্জদ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় যে, আসামী মোঃ ফিরোজ ও ডিসিষ্ট হোসেন খাঁ ওরফে আরাফাত খাঁন প্রকৃত চোর। একই সাথে বিভিন্ন সময়ে হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় চুরি করতো। চুরির টাকা ভাগ করার সময় আরাফাত ফিরোজের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫,০০০/- টাকা নেয়। আসামী ফিরোজ উক্ত পাওনা টাকা বিভিন্ন সময় চাইলে টাকা দিত না। গত ২২/০৫/২০২৫ খ্রিঃ আরাফাতের সাথে আসামী ফিরোজ পাবনা রোডের ভাঙ্গা গেস্ট হাউজের পিছনে রাখা পাইপ চুরি করার পরিকল্পনা করে এবং দুই হাজার টাকার বিনিময়ে মোছাঃ জুলেখাকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব করে। জুলেখা উক্ত প্রস্তাবে রাজি হয়। ২৩/০৫/২০২৫ খ্রিঃ রাত ০১.০০ ঘটিকার সময় মোছাঃ জুলেখাকে নিয়ে ডিসিষ্ট আরাফাত খাঁন ও আসামী মোঃ ফিরোজসহ আরো ০২ জন সলংগা থানাধীন হাটিকুমরুল গোলচত্ত্বরস্থ রোড এন্ড হাইওয়ের পরিত্যাক্ত রেষ্টহাউজ এর বাউন্ডারী ওয়ালের পিছনে পরিত্যাক্ত জায়গায় গেলে আসামী মোঃ ফিরোজ পূর্বের পাওনা ৫,০০০/- টাকা পুনরায় চাইলে ডিসিষ্ট ক্ষিপ্ত হয়ে ফিরোজকে চর-থাপ্পড় মারে। এতে আসামী ফিরোজ ক্ষিপ্ত হয়ে পার্শ্বে থাকা ইট দিয়ে ডিসিষ্ট হোসেন খাঁ ওরফে আরাফাত খাঁন এর মাথায় বারি মারে, এতে ডিসিষ্ট মাটিতে পরে যায় এবং আরাফাতের মুখে পরপর কয়েকটি বারি মেরে মুখমন্ডল থেতলে দেয় এবং ঘটনাস্থলে আরাফাত মারা যায়। আসামী ফিরোজ ও মোছাঃ জুলেখাসহ অন্যান্য আসামীগণ দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয় নিজেদের সম্পৃক্ততাসহ ঘটনার বিষয়ে লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় এবং বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।