সকল আশঙ্কার মেঘ কেটে রাজনৈতিক সংকটাবস্থা সমাধানের পথে বাংলাদেশঃ ড. ইউনূসের উদ্যোগে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক।
প্রধান বার্তা সম্পাদক- জাহারুল ইসলাম জীবন।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে জমে থাকা অনিশ্চয়তার মেঘ কেটে যেতে শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আহ্বানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সাথে অনুষ্ঠিত ফলপ্রসূ বৈঠকের পর একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক ভবিষ্যতের আশা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এই বৈঠককে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, খুব দ্রুতই একটি সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপ প্রণীত হবে। বৈঠকে উপস্থিত সকল দলই প্রধান উপদেষ্টাকে এই প্রক্রিয়ায় সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। বহুল প্রত্যাশিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ চলতি জুলাই মাসেই প্রকাশ পাবে বলে জানানো হয়েছে।
বৈঠকের মূল বার্তা ও দলগুলোর অবস্থানঃ-
** জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি): এনসিপি কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রতি নয়, বরং জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে ড. ইউনূসকে আহ্বান জানিয়েছে। এটি একটি নিরপেক্ষ ও জনমুখী সরকার গঠনের উপর এনসিপির জোর দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
** বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী: জামায়াত নির্বাচনের পূর্বে সংস্কারের দাবি জানিয়েছে। এর মাধ্যমে তারা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সাংবিধানিক ও আইনি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেছে।
** বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি): বিএনপি উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে, যেখানে বিতর্কিত ব্যক্তিদের বাদ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটি সরকারের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির উপর বিএনপির আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের বক্তব্যঃ-
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। এটি একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরিয়ে আনার সরকারের ইচ্ছাকে স্পষ্ট করে তোলে।
অতীতের সকল শঙ্কা এবং বর্তমানের স্বস্তিঃ-
উল্লেখ্য, এই বৈঠকের পূর্বে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগের আভাস এবং উপদেষ্টা পরিষদে তার নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানানোর কারণে রাজনৈতিক মহলে এক ধরনের শঙ্কা বিরাজ করছিল। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই জরুরি বৈঠকের পর সব ধরনের শঙ্কা কেটে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এই বৈঠককে ড. ইউনূসের বিচক্ষণ নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক দূরদর্শিতার ফসল হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বৈঠক বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতি ফিরিয়ে আনতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্থাপন করল। এখন সকলের দৃষ্টি থাকবে আসন্ন সংস্কার ও নির্বাচনী রোডম্যাপ এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের দিকে, যা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথ নির্ধারণে ( Entscheidende ) ভূমিকা পালন করবে।