খুলনায় এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মজিবুর রহমান মঞ্জু——
ভারতের পুশইন ও পানি আগ্রাসনের ব্যপারে সোচ্চার ও সতর্ক থাকার আহ্বান।
——————
খুলনা, ১৭ মে শনিবার, ২০২৫।
শাহ আলম গাজী আলম খুলনা জেলা প্রতিনিধি
———————
পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তির পক্ষ হয়ে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে ভারতের ষড়যন্ত্রমূলক পুশইন ও পানি আগ্রাসনের ব্যপারে সোচ্চার ও সতর্ক থাকার জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। আজ (শনিবার) খুলনায় এবি পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন; পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তির ষড়যন্ত্র এবং তাদের পক্ষ হয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের নির্লজ্জ আগ্রাসী মনোভাব আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে দাঁড় করিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল পক্ষকে ক্ষুদ্র স্বার্থে বিভেদে লিপ্ত না হয়ে তা মোকাবেলার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এবি পার্টি খুলনা জেলা ও মহানগরের যৌথ আয়োজনে বিকেল ৪ টায় খুলনা প্রেসক্লাবে দলের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে মজিবুর রহমান মঞ্জু প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। কেন্দ্রীয় কৃষি সম্পাদক এসএম আক্তারুজ্জামানের সঞ্চালনা ও মহানগর আহ্বায়ক সাইদুল হক মিলনের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে আরও বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক ( খুলনা বিভাগ ) অধ্যক্ষ ইয়ামিনুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা জেলার আহ্বায়ক আলমগীর হোসেন , কুষ্টিয়া জেলার আহ্ববায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক, নড়াইল জেলার আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, সাতক্ষীরা জেলার আহ্বায়ক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদের, গণসংহতি আন্দোলনের খুলনা জেলা আহ্বায়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, খুলনা মহানগরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন, খুলনা জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুল আজিজ, খুলনা জেলা এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক জসিম উদ্দীন, মহানগর যুব পার্টির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক, যুগ্ম- আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান, যুগ্ম- সদস্য সচিব জিএম গোলাম মোস্তফা, ডুমুরিয়া উপজেলার আহ্বায়ক শেখ মাসুদুল আলম, দিঘলিয়া উপজেলার আহ্বায়ক শেখ গোলাম রহমান, ফুলতলা উপজেলার আহ্বায়ক কাজী মিরাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গাজী সাইফুদ্দীন সহ আরো অনেকে ।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বক্তব্যে আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসক হাসিনা’র পতনের পর উচিত ছিল গণতন্ত্রের পক্ষের সকল শক্তি মিলে একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার। সরকার সবাইকে নিয়ে বসে, দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, খুনীদের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরী করতে পারতো। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত ছিলো পরস্পর বিবাদে লিপ্ত না হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সেই রোডম্যাপ তৈরীতে ইতিবাচকভাবে সরকারের প্রতি চাপ ও সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা । বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এক্ষেত্রে দুপক্ষের মাঝখানে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করতে পারতো। কিন্তু সেসব না করে যে যার মত বিচ্ছিন্ন ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। তিনি বলেন পরাজিত আওয়ামীলীগ ও তাদের আশ্রয়দাতা ভারতের মোদি সরকার কিন্তু বসে নেই। দিন রাত তারা ভাবছে কিভাবে বাংলাদেশকে বিপদে ফেলা যায়। সাম্প্রতিক দেশের বিভিন্ন সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের জোরপূর্বক পুশইনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামনের বর্ষা মৌসুমে ভারতীয় পানি আগ্রাসন দিয়ে দেশকে ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন করতে পারে তারা- এ ব্যপারে এখন থেকে সচেতন ও আগাম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তিনি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনার নানা সমস্যা তুলে ধরে বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া মিল কারখানাগুলো দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে নতুন করে চালু করলে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হতো। শহরে রিক্সা ও ইজিবাইকগুলো যত্রতত্র পার্কিংয়ের কারণে সৃষ্ট যানজট নিরসনে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বিভিন্ন অঞ্চলে গ্যারেজের ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব করেন তিনি। মরনফাঁদ ফারাক্কা’র প্রভাবে সুন্দরবন ও তদসংলগ্ন অঞ্চল পরিবেশগত ঝুঁকিতে পড়ার ব্যপারে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তিনি দাবি জানান। এর আগে জনাব মঞ্জু ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর থিম সম্বলিত ফেস্টুন ও বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।