আবদুল হামিদের বিদেশ যাত্রায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ: কিশোরগঞ্জের এসপি প্রত্যাহার
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি আল আমিন
সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের থাইল্যান্ডে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে দেশত্যাগের ঘটনায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. আজহারুল ইসলাম এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) এটিএসআই মো. সোলায়মানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত ৮টার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক ক্ষুদেবার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ পুলিশের সদর দপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) ইনামুল হক সাগর।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যা, কিডনি জটিলতা এবং পাইলসের সমস্যায় ভুগছিলেন। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চিকিৎসকদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনি বুধবার (৭ মে) দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন।
তবে তার এই বিদেশ সফর নিয়ে প্রশাসনের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়, কারণ তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
মামলার পটভূমি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা তহমুল ইসলাম মাজহারুল কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ছাড়াও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে আসামি করা হয়।
বাদীর অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই তার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মামলাটি আমলে নেওয়ার পর তা তদন্তাধীন রয়েছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।
বিদেশ গমনের অনুমতি ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে পুলিশ সদর দপ্তর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার এবং মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—একজন হত্যা মামলার আসামি কীভাবে এত সহজে বিদেশে চলে গেলেন এবং প্রশাসন সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে কীভাবে তার যাত্রার অনুমতি দিল।