1. shahinsalman99@gmail.com : দৈনিক আজকের জনতার কথা : দৈনিক আজকের জনতার কথা
  2. info@www.dainikajkerjanatarkotha.online : দৈনিক আজকের জনতার কথা :
সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুমিল্লা — গৌরব আমার ঐতিহ্য মেনে শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৮তম জামাত অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব জনাব জাহারুল ইসলাম জীবনের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বাণীঃ দেশ ও দেশের প্রবাসী সকল ভাই- বোনদেন প্রতি পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন ” আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শেখ শাহীন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব জনাব জাহারুল ইসলাম জীবনের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বাণীঃ- ” প্রিয়, দেশ ও দেশের বাহিরের সকলের প্রতি রহিল অগ্রিম ঈদুল আজহার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন “-** ঈদ মোবারক** মানবাধিকার সেক্রেটারি মোহাম্মদ গোলাম মাওলা পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন খুলনা বিভাগ সহ মংলা রামপাল বাসীকে। পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশবাসী ও প্রবাসী ভাই ও বোনদের ” ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার সিনিয়র:ভাইস -চেয়ারম্যান শেখ শাহীন বোমা হামলা চাঁদাবাজি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিএনপির মতবিনিময় সভা পাকুন্দিয়ায় বাসচাপায় হাফেজ সারোয়ার নিহত ★ঈদ মোবারক!-ঈদুল আজহা’র বিশেষ অগ্রিম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা★

কক্সবাজারের স্মরণ এলাকা হোটেল ব্যবসার আড়ালে পরিনত হয়েছে পাপের স্বর্গরাজ্যে !

স্টাফ রিপোর্টারঃ নুরুল ইসলাম, কক্সবাজার কে সঙ্গে নিয়ে প্রধান বার্তা সম্পাদক- জাহারুল ইসলাম জীবন এর বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।
  • প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজারের স্মরণ এলাকা হোটেল ব্যবসার আড়ালে পরিনত হয়েছে পাপের স্বর্গরাজ্যে !

স্টাফ রিপোর্টারঃ নুরুল ইসলাম, কক্সবাজার কে সঙ্গে নিয়ে প্রধান বার্তা সম্পাদক- জাহারুল ইসলাম জীবন এর বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।

পর্যটন নগরী কক্সবাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত স্মরণ এলাকা এখন যেন এক ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়েছে। এক সময়ের পরিচিত আবাসিক এলাকাটি বর্তমানে অনৈতিক কার্যকলাপের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সাইনবোর্ডধারী এবং সাইনবোর্ডবিহীন একাধিক হোটেলের আড়ালে এখানে চলছে জমজমাট নারী দেহ ব্যবসা ও মাদক বাণিজ্য। স্থানীয়দের কাছে এটি এখন ‘পাপের স্বর্গরাজ্য’ নামেই পরিচিতি লাভ করেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্মরণ বহুমুখী সমবায় সমিতির আওতাধীন এই এলাকায় বেশ কয়েকটি হোটেলে প্রকাশ্যেই চলছে ইয়াবা ও পতিতাদের হাট। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হোটেলগুলোর আশেপাশে অপরাধীদের আনাগোনা লেগেই থাকে। তবে সন্ধ্যার পর এই চিত্র আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। মনে হয় যেন পুরো স্মরণ এলাকা একটি ছোটখাটো পতিতালয়ে রূপান্তরিত হয়েছে।
এই ঘৃণ্য ব্যবসায় সরাসরি জড়িত রয়েছে অনেক হোটেল মালিক ও কর্মচারী। তারা বিভিন্ন দালালদের মাধ্যমে শহরের নামিদামি হোটেল থেকে শুরু করে নিম্নস্তরের খদ্দেরদের কাছে নারী সরবরাহ করে থাকে। শুধু তাই নয়, পতিতা ও খদ্দেরদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু-কিশোরদেরও। কমিশন ভিত্তিক এই কাজে কিছু সংখ্যক রিক্সা ও সিএনজি চালকও জড়িত। নিরাপদ স্থান হিসেবে পরিচিত হওয়ায় মধ্য ও উচ্চবিত্তের লোকজনও নিয়মিতভাবে এসব হোটেলে এসে অনৈতিক কার্যকলাপে লিপ্ত হচ্ছে। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, এদের কোনো প্রকার ভয়ভীতি নেই।
অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে এসেছে বেশ কিছু হোটেলের নাম, যারা সাইনবোর্ড ব্যবহার না করেও অঘোষিত পতিতালয় হিসেবে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আজিজ গেস্ট ইন, নাঈমা রিসোর্ট, শিউলি গেস্ট হাউজ, সী-টাউন এবং আমির ড্রীম। কেউ সরাসরি এই অপকর্ম চালাচ্ছে, আবার কেউ তাদের হোটেল ভাড়া দিয়ে এই ঘৃণ্য ব্যবসাকে টিকিয়ে রেখেছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আজিজ গেস্ট ইনের মালিক আজিজ তার ভাড়াটিয়া লোকমানের মাধ্যমে, শিউলি গেস্ট হাউসের মালিক হেলাল কোম্পানি তার ভাড়াটিয়া রহিমের মাধ্যমে, সী-টাউনের মানিক জাহাঙ্গীর তার ভাড়াটিয়া সিরাজ সওদাগরের মাধ্যমে এবং আমির ড্রীমের মালিক বদিউল আলম তার ভাড়াটিয়া মিজান, বশির ও শাহিনের মাধ্যমে হোটেলে পতিতাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, নাঈমা রিসোর্টের মালিক মকসুদ মিয়া প্রকাশ আসিফ এবং হিল টাউনের মালিক হেলাল সরাসরি এই ব্যবসায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এসব হোটেলের মালিকরা স্থানীয় প্রশাসনকে মাসিক ভিত্তিতে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ‘মাসোহারা’ দিয়ে থাকে। এই কারণেই তাদের অবৈধ ব্যবসা অনেকটা নির্বিঘ্নে চলে। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান পরিচালিত হলেও তা ব্যবসায় কোনো প্রকার প্রভাব ফেলে না। সব মিলিয়ে প্রশাসনের নীরবতা ও খামখেয়ালিপনার কারণে হোটেলগুলো অপরাধী ও অপরাধের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, এখন দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই হোটেলগুলোতে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চলে। খুব সহজেই হাতের নাগালে পাওয়া যায় বিভিন্ন দামের পতিতা ও মাদকদ্রব্য। এই চক্রের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত। প্রতিদিন অপরাধ করেও রহস্যজনক কারণে তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। হোটেলগুলোর একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণকারী সিন্ডিকেট থাকলেও তারা অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। এ কারণেই বাস টার্মিনাল এলাকার এই হোটেলগুলো ‘পাপের স্বর্গরাজ্য’-এ পরিণত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, এসব হোটেলে মূলত ব্যবসায়ী ও গাড়ির ড্রাইভাররাই বেশি যাতায়াত করে। আর এই খদ্দেরদের কাছে খুব সহজেই পতিতা সরবরাহ করে আশপাশের কিছু দালাল। এখন প্রতি রাতেই এখানে পতিতাদের আনাগোনা দেখা যায়। অসাধু হোটেল মালিকরা এই পতিতাবৃত্তিকে ‘দেহ শিল্পে’ রূপান্তরিত করেছে। তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সিএনজি ও রিক্সা চালকদের সাথে মোবাইল নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে এই ব্যবসা পরিচালিত হয়। এসব হোটেল মালিকদের প্রধান লক্ষ্য রোহিঙ্গা নারীদের সংগ্রহ করে তাদের ব্যবসায় ব্যবহার করা। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আগমনের পর থেকে হোটেলগুলোতে রোহিঙ্গা পতিতাদের আনাগোনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক হোটেল ব্যবসায়ী জানান, স্মরণ এলাকা এখন পতিতার জোন হিসেবে পরিচিত। কোনো সাধারণ মানুষের জন্য এই এলাকা নিরাপদ নয়। কোনো সভ্য মানুষ এখানে বসবাসের অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। পাপের নতুন ঘাঁটি হিসেবে এখন একটাই পরিচয় – স্মরণ এলাকার হোটেলগুলো। এই হোটেলের মালিকরা একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট এবং অসাধু কর্মকর্তা ও দালালদের তত্ত্বাবধানে রমরমা দেহ ব্যবসা চালাচ্ছে। সূত্র জানায়, এসব হোটেলগুলোতে প্রতিদিনই রোহিঙ্গা, স্কুল ও কলেজের ছাত্রীদেরও এনে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। রেজিস্ট্রার খাতায় বোর্ডারদের নাম-ঠিকানা লেখার নিয়ম থাকলেও তা কেউ মানে না। বেপরোয়া ভাড়া বাণিজ্য চলে হোটেলগুলোতে। স্মরণ এলাকার হোটেল মালিকদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা শক্তিশালী সিন্ডিকেট শুধু পতিতা ব্যবসার সাথেই জড়িত নয়, মাদকদ্রব্য, চোরাচালান, ইয়াবা সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মও তারা নিয়ন্ত্রণ করে। এমনকি পর্যটক ছিনতাইয়ের সাথেও এদের যোগসাজশ রয়েছে। তাদের সাথে জড়িত রয়েছে কিছু টোকাই শ্রেণির লোকজনও। এদের কারণে স্থানীয় শিক্ষিত সমাজ চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, হোটেলগুলোতে মূলত কিছু স্থানীয় দালালদের হাত ধরেই অনেকে পতিতাবৃত্তিতে জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে বহু প্রবাসীর সংসার ভাঙছে এবং নষ্ট হচ্ছে উঠতি বয়সী যুবক-যুবতীর জীবন। পতিতাবৃত্তির কষাঘাতে অকালে ঝরে পড়ছে অনেক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ।
এ ব্যাপারে টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, “আমরা টুরিস্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। যৌনপল্লী ভেঙে দেওয়া আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিষয়। আমরা এ ব্যাপারে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারি না। যদি হস্তক্ষেপ করতে হয়, তাহলে কক্সবাজারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সাংবাদিক, পর্যটন সমিতি সহ সকলের সমন্বিত পদক্ষেপে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।”
এই বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দীন শাহীন বলেন, “এই ব্যাপারে আমার জানা নেই। তবে আমি দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
কক্সবাজারের স্মরণ এলাকার এই ভয়াবহ চিত্র স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তারা অবিলম্বে এই অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। পর্যটন নগরীর এই কলঙ্কিত অধ্যায় কবে শেষ হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, আমাদের প্রকাশিত সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার অপরাধ।
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট