পুত্রবধূর অত্যাচারে হৃদরোগে মৃত্যু: রহস্যঘেরা মৃত্যুর অভিযোগ পরিবারে!
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
কমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার মগপুস্কুরিনী গ্রামে হৃদয়বিদারক এক ঘটনা ঘটে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল সরকার (৬৫) নিজ বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তবে পরিবারের কিছু সদস্যের দাবি, এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়—বরং এটি পরিকল্পিত অবহেলা ও মানসিক নির্যাতনের ফল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আ. জলিল সরকার ছিলেন একজন বুদ্ধিমান এবং স্পষ্টভাষী মানুষ। জীবনের শুরুতে তিনি নানা ধরনের অভাব-অনটন আর পারিবারিক অশান্তির মধ্য দিয়ে সময় পার করেছেন। স্ত্রী জোৎস্না বেগমের সঙ্গে সংসার শুরু হলেও সম্পর্ক কখনো মসৃণ ছিল না। অভিযোগ রয়েছে, স্ত্রী সবসময় শ্বশুরবাড়ির বিষয় পিতৃগৃহে জানিয়ে দিতেন, যা সংসারে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করত।
জীবনের এক পর্যায়ে আ: জলিল সরকার সিলেটে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর ঘরে তিন ছেলে ও এক মেয়ে, আর দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে আরও দুটি সন্তান রয়েছে। প্রথম ছেলে জসিমের বিয়ের পর থেকে শুরু হয় জলিল সরকারের উপর পারিবারিক অত্যাচারের নতুন অধ্যায়।
অভিযোগ রয়েছে, স্ত্রী জোৎস্না বেগম ও পুত্রবধূ নূরজাহান মিলে নিয়মিতভাবে তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। ঠিকমতো খাবার, চিকিৎসা এমনকি পরিধানের পোশাক পর্যন্ত দেওয়া হতো না। রমজান মাসে পুরো সময়টাই তিনি মানসিক কষ্টে ছিলেন এবং তার দুঃখের কথা বারবার মেয়ের জামাইয়ের কাছে প্রকাশ করতেন।
২০ রমজান তারিখে আ: জলিল সরকারের বুকে তীব্র ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নেওয়ার পরিবর্তে পরিবারের সদস্যরা অবহেলা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। অবশেষে রাত ৩টার দিকে তার মৃত্যু ঘটে।
পরিবারের কিছু সদস্যের দাবি, এটি নিছক একটি হৃদরোগের ঘটনা নয় বরং দীর্ঘদিনের মানসিক নির্যাতন, চিকিৎসার অভাব এবং পরিকল্পিত অবহেলার ফল। এ ঘটনায় স্ত্রীর সঙ্গে পুত্রবধূর জড়িত থাকার অভিযোগও তুলেছেন তারা।
স্থানীয়রা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন। তবে এখনো থানায় কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হয়নি।