চট্টগ্রাম-ইতালি সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরুঃ আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন।
প্রধান বার্তা সম্পাদক- জাহারুল ইসলাম জীবন।
দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে এক নতুন মাইলফলক অর্জিত হলো। গত ২৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখ বিকেলে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে সরাসরি ইতালির উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছে লাইব্রেরিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি সোজ্ঞা চিতা। ৯৫০ কন্টেইনার রপ্তানি পণ্য নিয়ে জাহাজটির এই যাত্রা দেশের আমদানি-রপ্তানি ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। কন্টেইনার পরিবহনে তৈরি হয়েছে এক নতুন ইতিহাস।
"মেড ইন বাংলাদেশ" স্টিকারযুক্ত ৯৫০ কন্টেইনারে বোঝাই রয়েছে তৈরি পোশাক। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে সরাসরি ইউরোপ রুটে জাহাজ চলাচলের এই সূচনা বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য খুলে দিয়েছে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। এতদিন ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে পণ্য পরিবহনের জন্য মধ্যবর্তী বিভিন্ন বন্দরে জাহাজ পরিবর্তন করতে হতো, যা সময় ও খরচ দুটোই বাড়াতো। এই সরাসরি জাহাজ চলাচল সেই জটিলতা কমিয়ে আনবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, এম ভি সোজ্ঞা চিতা নামের এই জাহাজটি অত্যাধুনিক সব সুবিধা সম্বলিত। এই রুটে নিয়মিত জাহাজ চলাচল শুরু হলে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবহন খরচও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের প্রতিযোগিতামূলকতা ( Competitiveness ) বাড়াতে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি কারক শিপিং এজেন্ট এবং শিপিং (এক্সপোর্ট-ইমপোর্টার) প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এই নতুন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা আশা প্রকাশ করছেন যে, এই নতুন অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বের বায়ার প্রতিষ্ঠানগুলোও উৎসাহিত হবে এবং এর ফলে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।
এই ঐতিহাসিক জাহাজ চলাচল উদ্বোধনের সময় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং শিপিং ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা এই উদ্যোগকে দেশের অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেন।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চট্টগ্রাম-ইতালি সরাসরি জাহাজ চলাচল বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে একটি নতুন গতি সঞ্চার করবে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ তৈরি করবে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ভবিষ্যতে এই রুটে আরও বেশি সংখ্যক জাহাজ চলাচল করবে এবং অন্যান্য ইউরোপীয় গন্তব্যেও সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এই নতুন পরিবহন ব্যবস্থা বাংলাদেশের আমদানি ও রপ্তানি খাতকে আরও শক্তিশালী এবং কার্যকর করে তুলবে, যা শেষ পর্যন্ত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।