নির্বিচারে নিহত পুলিশ কনস্টেবেলের বিচার দাবি নিয়ে গণহত্যা-অন্ধ বিচারবিভাগ অভিযোগ
কুমিল্লা, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ – কুমিল্লায় এক নির্দোষ নারী পুলিশ কনস্টেবলকে কোণঠাসা করে হত্যা এবং তার গর্ভে থাকা শিশুটির জীবন অধিকার হরণে সারা দেশজুড়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবারের অভিযোগ, মালিকানা ও ক্ষমতার খেলা হিসেবে এক পুলিশ কনস্টেবেলের মূল্যহীন জীবনের সুষ্ঠু বিচার থেকে চোখ ফেরানো হয়েছে।
গত ১৫ এপ্রিল, Debidwar উপজেলায় দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল (নাম গোপন)–কে হেফাজতে নিয়ে রায়হানি মালিকের অনুসারীরা ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা এবং বেফাঁস গুলি চালিয়ে নির্মমভাবে আহত করে। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যান তিনি। গর্ভে থাকা তার চার মাস বয়সী সন্তানটিও চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে মারা যায়। স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি, কোনও প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন পরিবেশন করেনি।
পরিবারের দাবি, মৃত্যুকালীন ঘটনার পর ১০ দিনের মধ্যে সরকারি বরাদ্দের মেডিক্যাল এডভান্সও মঞ্জুর হয়নি। বরং এপ্রিল মাসে স্বাধীনতার সংগীর প্রতি বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয়, ড্রোন ফ্লাইট ও মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে তোলা দ্বিতীয় মুক্তিযোদ্ধা আবু সাইদের মুর্ত্তি ও স্মরণিকা উদ্বোধন হয়েছে। নৃতাত্ত্বিক এই ‘ঋণগ্রহণের’ পথে উঠে এসেছে প্রশ্ন– কাদের জীবন মূল্যবান, আর কাদের নয়?
পরিবারের অধিকার
“আমার বোন ছিল সাদা ইউনিফর্মের রক্ষক, অথচ নির্দোষ বলে খুনের দায় থেকে অব্যাহতি। তার সন্তানকে প্রাণপ্রদানে ব্যর্থ প্রশাসন দীর্ঘদিনের ঘুণ ধরে রেখেছে,” অভিযোগ করেন নিহত কনস্টেবেলের ভাই মো. আমিন।
স্থানীয় নেতারা এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইতোমধ্যে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে। “পুলিশি সন্ত্রাসের শিকার নির্দোষ ব্যক্তি কাউন্টেবল বা সাধারণ মানুষ—দুই অবস্থাতেই অবিচার মোটেও মেনে নেয়া যায় না”, জানান মানবাধিকার আন্দোলন ‘সত্যান্বেষী’ এর সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর হাসান।
আইন প্রশাসনের করণীয়
একাধিক আইনজীবী ও পশ্চিম কাঠালিয়া থানার পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি পাঠিয়েছেন। জেলা আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এ.কে.ম হায়দার বলেন, “প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আনতে হবে; নইলে উচ্চতর তদন্তে মামলা হস্তান্তরের নির্দেশ দাবি করব।”
মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণীয়তা বনাম সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, “মুক্তিযোদ্ধা ও পরাধীনতা সংগ্রামকারীদের প্রতি রাষ্ট্রীয় ঋণ-গ্রহণ ঠিক আছে; কিন্তু যারা আজ দেশের সীমানা স্বচক্ষে পাহারা দেয়, তাদের সুরক্ষা প্রশাসনকেই নিশ্চিত করতে হয়।”