ভারতে মুসলিমদের প্রতি ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষ ও অত্যাচারের মাত্রা বেড়েই চলেছে,পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে উদ্বেগ জনক!
প্রধান বার্তা সম্পাদক- জাহারুল ইসলাম জীবন।
ভারতে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষ, বৈষম্য এবং অত্যাচারের ভয়াবহ চিত্র ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, উগ্র হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শের বিস্তার ভারতে মুসলিমদের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে তারা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে বহুবিধ বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ভারতের সংসদ সদস্যসহ উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিভিন্ন স্তরের নেতারা প্রায়শই মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষপূর্ণ ও উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন। মুসলিমদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার প্রকাশ্য হুমকি এবং তাদের নিধনের মতো ভয়ঙ্কর আহ্বানও শোনা যাচ্ছে বলে অভিযোগে প্রমাণিত হচ্ছে।
আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, মুসলিম নারীদের প্রতি সহিংসতার ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। অভিযোগ অনুযায়ী, বোরকা পরিহিত পর্দানশীল নারীসহ সাধারণ মুসলিম নারীদের পথঘাট এমনকি তাদের নিজ বাড়ি থেকেও অপহরণ করে শ্লীলতাহানি, গণধর্ষণ এবং সেই ঘৃণ্য ঘটনার ভিডিও ধারণ করে উল্লাস করার মতো অমানবিক কার্যকলাপ সংঘটিত হচ্ছে। এই ধরনের নারকীয় ঘটনা যেন নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিছু সূত্রে এমনও অভিযোগ করা হয়েছে যে, মুসলমানদের ধরে নিয়ে মন্দিরে প্রকাশ্যে বলি দেওয়া এবং তাদের (Decapitated) বিবস্ত্র লাশ টেনে হিঁচড়ে ঘোরানোর মতো নৃশংস ঘটনা ঘটছে। এই ধরনের বর্বর কার্যকলাপ মানবাধিকার ও মানবতাকে চরমভাবে পদদলিত করছে।
এই পরিস্থিতিতে, পর্যবেক্ষকরা ভারতের এই পরিস্থিতিকে বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর চলমান অন্যান্য নৃশংস ঘটনার সঙ্গে তুলনা করছেন, যেমন ইসরায়েল ও তার মিত্রদের দ্বারা ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফা, সিরিয়া এবং মায়ানমারে সংঘটিত ধ্বংসযজ্ঞ ও গণহত্যা। তাদের মতে, ভারতেও মুসলিমদের প্রতি বিদ্বেষ একই ধরনের ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিকতাবাদ এবং একটি দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট বিধান থাকা সত্ত্বেও ভারত সরকার এই বিষয়ে কার্যত নীরব রয়েছে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের কার্যকলাপের প্রতি সরকারের নীরবতাকে তাদের মৌন সমর্থন হিসেবে দেখছেন অনেকে।
এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি যদি দ্রুত সমাধান করা না যায়, তবে জাতিগত বিদ্বেষ এবং ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলস্বরূপ বিশ্ব শান্তি, কল্যাণ এবং মানবজাতির ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে এবং বিশ্ব একটি স্থায়ী অস্থিরতার আবর্তে নিমজ্জিত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলির উচিত দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণপূর্বক এই বিষয়গুলির গুরুত্ব অনুধাবন করে ভারত সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা, যাতে তারা দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও সমান অধিকার নিশ্চিত করে এবং সংখ্যালঘুদের প্রতি বিদ্বেষ ও সহিংসতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। অন্যথায়, এই ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষ বিশ্ব শান্তির জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।