কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বেকারত্ব ঘোচাতে করলা চাষে সফল উদ্দোক্তা বাচ্চু মিয়া
মোঃআব্দুল আলিম (ব্যুরো অফিস) রংপুরঃ
হলুদ ফুল আর সবুজ পাতায় একাকার হয়ে আছে পুরো ক্ষেত। মাচার নিচে ঝুলে আছে ছোট-বড় করলা। দেখলেই মন জুড়ে যায়। মনভোলা ফসলের চিত্র দেখলেই কৃষকের সম্ভাবনার আশা সঞ্চার হয়। তাই তার কষ্টে গড়া ক্ষেতে ভাল ফলন হওয়ায় বেকার বাচ্চু মিয়া অধিক মুনাফার স্বপ্ন বুনছেন।
নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী ইউনয়নের বালাপাড়া গ্রামের কৃষক জিকরুল হকের ছেলে বাচ্চু মিয়া ১ একর ১৫ শতক জমিতে করলা চাষ করে ভাল ফলন পেয়ে অধিক মুনাফার স্বপ্ন দেখছেন। মাচা ব্যবহার করে ফলনও পেয়েছেন আশানুরূপ। বাজারে দাম ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার আশা তার।২৯ বছর বয়সি যুবক বাচ্চু মিয়ার ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া সাঙ্গ হলেও নিজস্ব মেধাশক্তি ও পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে কৃষি উদ্যোক্তা হয়েছেন। নিজের জমি না থাকলেও বছর ভিত্তিক চুক্তি নিয়ে করলা চাষে নিবীড় শ্রম দিচ্ছেন। ওই জমিতে আলু চাষ করার কারণে জৈব ও রাসায়নিক সার সাশ্রয় হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, আমার ভগ্নিপতি দিনাজপুর উপজেলার খানসামা উপজেলার বাবু মিয়াও একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি সার্বক্ষনিক পরামর্শ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা করছেন। একই ইউনিয়নের কান্দুরার মোড়ের বন্ধু মমিনুর রহমান (৩৬) তার পার্টনার হিসাবে কাজ করছেন।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করায় ফসলে রোগবালাই কম হয়েছে বলে তিনি জানান। এ বছর অনুকূল আবহাওয়া ও রোগবালাই কম হওয়ায় করলার ফলন ভালো হয়েছে। গাছ বেড়ে ওঠার জন্য পুরো ক্ষেঁতে মাচা তৈরি করে দিয়েছি বলে ভাল ফলন হয়েছে।
তিনি বলেন, উৎপাদন খরচের তুলনায় করলা চাষে লাভ বেশি। বাড়ীর পাশে ১ একর ১৫ শতক মাটিতে উন্নত জাতের হাইব্রীড করলা চাষ শুরু করেছি। সব মিলিয়ে আমার চাষাবাদে খরচ হয়েছে দুই লক্ষাধিক টাকা। মার্চের শুরুতেই ফলন শুরু হয়েছে। গোড়ের করলা তুলে ৪ মন পেয়েছি। ৫৩ টাকা কেজি দরে স্থানীয় পাইকাররা করলা কিনে নিয়েছে। কোন দুর্যোগের মুখোমুখি না হলে ৭০ দিন পর্যন্ত ফসল তুলতে পারব ইনশাআল্লাহ্। সাড়ে তিন বিঘা জমির করলা বিক্রি করে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা লাভ করার আশা তার।
পুটিমারী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নৃপেন চন্দ্র জানান, করলা বছরের যে কোনো সময় চাষ করা যায়। এ সবজি চাষে রাসায়নিক সারের প্রয়োজন খুব কম হয়। এ ছাড়া রোগবালাইও কম হয়। এজন্য ধান কিংবা অন্যান্য মাঠ ফসলের তুলনায় করলা চাষ বেশি লাভজনক হওয়ার কারণে সারাবছর বাজারে চাহিদা থাকে। তিনি বলেন, বাচ্চু একজন সফল সবজি চাষী। উন্নত পদ্ধতিতে করলা চাষ করে সফল হয়েছেন। এতে করে অন্যান্য কৃষকও অনুপ্রাণিত হবেন। কৃষি বিভাগ এ বিষয়ে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে আসছে।
কিশোরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নীল রতন দেব বলেন, করলা তেঁতো স্বাদের সবজি। তবে এর মধ্যে রয়েছে নানা গুণ। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটি হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী সবজি।
নিয়মিত করলা খেলে
ওজন ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে,,,
এছাড়া এটি চর্মরোগ থেকে সুরক্ষা দেয় বলে জানান।