আশিক চৌধুরী ও ড. ইউনুসের হাত ধরে উন্নত ভবিষ্যতের পথে বাংলাদেশঃ বিনিয়োগ সম্মেলনে বিশ্ব দেখলো নতুন দিগন্ত!
কেন্দ্রীয় বার্তা সম্পাদক- জাহারুল ইসলাম জীবন এর সম্পাদনায় লেখা বিশেষ প্রতিবেদন।
“বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য সেরা জায়গা” – এই স্লোগানকে সামনে রেখে বিশ্বের বৈশ্বিক আবহাওয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের অস্থিরতা হেতু চলমান নিঃসংশ গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের চরম দামামা যখন বেজেই চলেছে এবং সমগ্র বিশ্বসহ বাংলাদেশ বিক্ষোভ মিছিল ও আন্দোলনে উত্তাল ঠিক সেই মুহূর্তেই ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫ গতকাল সমাপ্ত হয়েছে এই বিনিয়োগ সম্মেলন। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত এই সম্মেলনে ৪০টিরও বেশি দেশ থেকে ৬শতাধিক আগত বিশিষ্ট বিনিয়োগকারী ও প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সম্মেলনের মূল আকর্ষণ ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস এবং তার সহযোগী আশিক চৌধুরী, যাদের হাত ধরে বাংলাদেশ এক অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও বিনিয়োগের মহাসড়কে যাত্রা শুরু করেছে।
এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা এবং অগ্রগতির এক নতুন চিত্র প্রত্যক্ষ করেছে। অধ্যাপক ড. ইউনুস তার উদ্বোধনী ও সমাপনী বক্তব্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ব্যবসা করে আপনারা শুধু একটি দেশের উন্নয়নে অংশীদার হবেন না, বরং পুরো বিশ্বকে বদলে দেওয়ার যাত্রায় যুক্ত হবেন।” তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ কাজ করে দেখায় এবং একবার কেউ শুরু করলে অন্যরা এগিয়ে আসে। দেশের আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিদেশি ও দেশি বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। অধ্যাপক ইউনুস ব্যবসার মাধ্যমে ‘তিন শূণ্য’ (দারিদ্র্য শূণ্য, বেকারত্ব শূণ্য ও কার্বন নিঃসরণ শূণ্য) পৃথিবী গড়ার স্বপ্নের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সম্পদ কেন্দ্রীকরণের বিপদ সম্পর্কে সকলকে সতর্ক করেন। তরুণ প্রজন্মের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে বেকারত্ব দূরীকরণের উপরও তিনি জোর দেন।
এই উন্নয়নযজ্ঞের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব আশিক চৌধুরী। যদিও নামটি এখনো অনেকের কাছে অপরিচিত, তবে তার কর্মযজ্ঞ ইতিমধ্যেই দেশের উন্নয়ন ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। সিঙ্গাপুরের মতো লোভনীয় ক্যারিয়ার ছেড়ে, শুধুমাত্র দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের দৃঢ় সংকল্প নিয়ে তিনি অধ্যাপক ড. ইউনুসের স্যারের মাত্র ৫৯ সেকেন্ডের কথোপকথন ফোন কলের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। বর্তমানে তিনি একজন প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করছেন।
অধ্যাপক ইউনুস এবং আশিক চৌধুরীর সমন্বিত উদ্যোগে গত কয়েক সপ্তাহে বাংলাদেশ বেশ কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ
** বিশ্বের প্রযুক্তি জায়ান্ট এলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট সুবিধা বাংলাদেশে নিয়ে আসা।
** মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সাথে গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর।
** প্রায় $১ বিলিয়ন (এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির চুক্তি।
** দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে পাঁচটি মালবাহী জাহাজ ক্রয়।
** নদী ব্যবস্থাপনার জন্য বিপুল আকারের উদ্যোগ গ্রহণ।
** আন্তর্জাতিক মানের চারটি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা।
** আধুনিক ইলেকট্রিক বুলেট ট্রেন প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ।
** দশটি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।
আশিক চৌধুরীর প্রধান লক্ষ্য হলো আগামীতে $১০০ বিলিয়ন বিনিয়োগ আকর্ষণ করা, এক লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা এবং দেশের ৩ কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা।
অধ্যাপক ড. ইউনুস এবং আশিক চৌধুরীর এই সম্মিলিত প্রয়াসকে দেশের গুণীজন ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্বরা সাধুবাদ জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এই নিবেদিতপ্রাণ মানুষগুলোর সঠিক মূল্যায়ন করতে পারলে বাংলাদেশ অচিরেই সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার মতো উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
কথিত সোনার দেশ এবার প্রকৃতই স্বর্ণালী সোনার বাংলাদেশ হিসাবে বিশ্ব দরবারে উন্নত ও অগ্রগতির পরিচয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।
সম্মেলনে আগত বিনিয়োগকারীরা অধ্যাপক ইউনুস ও আশিক চৌধুরীর দূরদর্শী পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার দেখে অত্যন্ত আশাবাদী। তারা মনে করছেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এখন সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।
এই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলন ২০২৫ শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা ছিল না, বরং এটি ছিল উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। অধ্যাপক ড. ইউনুস এবং আশিক চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে চলেছে, তা এখন সময়ের অপেক্ষা। দেশের আপামর জনগণ এই স্বপ্নদ্রষ্টা ও কর্মবীরদের প্রতি তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানাচ্ছে।