বাংলাদেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা: মহাআতঙ্কে মহামারীর রূপ নিচ্ছে ঘটছে অকাল মৃত্যু!
কেন্দ্রীয় বার্তা সম্পাদক-জাহারুল ইসলাম জীবন।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনা এক ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, বিশেষ করে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে মর্মান্তিক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা, কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য তরুণের প্রাণ।
এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উঠতি বয়সী কিশোর-তরুণদের বেপরোয়া মনোভাব। তাদের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে জ্ঞানের অভাব এবং দ্রুত গতির প্রতি আকর্ষণ দেখা যায়। প্রায়ই দেখা যায়, তারা উচ্চ বিলাসী মোটরসাইকেল কিনে শহরের রাস্তায় বা মহাসড়কে বিপজ্জনকভাবে চালায়, যা প্রায়শই দুর্ঘটনার কারণ হয়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অধিকাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার চালকদের বয়স ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। তাদের মধ্যে অনেকেই চালায় লাইসেন্সবিহীন অথবা চালায় দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে।
এই পরিস্থিতিতে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা রোধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, তরুণদের মধ্যে সড়ক নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। স্কুল-কলেজে এ বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা উচিত। দ্বিতীয়ত, মোটরসাইকেল চালকদের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণ এবং লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয়ত, ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং বেপরোয়া গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
মহাসড়ক গুলোর দু'পাশে নিরিবিলি ফাঁকা জায়গায় বা মাঠের ধারে বর্তমান সময়ে হঠাৎ করেই ব্যাঙের ছাতার মত গঁজিয়ে ওঠা বিনোদনমূলক চা ও কফি শপ গুলো রাত নয়টার ভিতরেই বন্ধ করনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে। কারন সন্ধ্যার পর হইতে মধ্য রাত প্রর্যন্ত এই সকল কফি হাউস গুলো জমকালো আলোকসজ্জার পসরা সাঁজিয়ে খোলা থাকে যেখানে অধিকাংশই এই সকল উঠতি বয়সী কিশোর-তরুণদের উপস্থিতি বেশি পরিমাণে পরিলক্ষিত হয়। বন্ধুদের নিয়ে চা-কফি ও আড্ডাবাঁজি শেষে রাত্রে মহাসড়কের হাইওয়েতে মোটরসাইকেল রেসিং বাঁজি প্রতিযোগিতায় বেপরোয়া মাতোয়ারা হয়ে ওঠে যাহা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার আরেকটি অন্যতম কারণ বলে পরিলক্ষিত হচ্ছে।
এছাড়াও, অভিভাবকদের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরী। তাদের সন্তানদের মোটরসাইকেল ক্রয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে উচ্চবিলাসীতা ও অসচেতনতা পরিহার পূর্বক মারাত্মক সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত এবং সন্তানের বয়স ও মানসিকতা অনুযায়ী মোটরসাইকেল ব্যবহারের বিষয়ে আরও সচেতন হতে হবে। তাদের উচিত সন্তানদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জ্ঞান এবং দায়িত্বশীল ড্রাইভিং সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া।
যদি আমরা এখনই এই সমস্যার সমাধানে মনোযোগ না দিই, তবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে এবং অকালে ঝরে যেতে পারে আরও অনেক তরুণের তাজা প্রাণ।