দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই, জানালেন উপদেষ্টা:
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:আল আমিন
কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। ছবি: আজকের পত্রিকা
অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, সরকারের কাছে যথেষ্ট খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই।
আজ শনিবার কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন। জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের সভাপতিত্বে ভাতশালা হাওর এলাকায় সভাটি হয়।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা জানান, গত বন্যায় আমন ধানের যে ক্ষতি হয়েছে, সে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার খাদ্যশস্য আমদানি করছে। আর এবার হাওরসহ সারা দেশে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে খাদ্য উদ্বৃত্ত হবে দেশে। আর কৃষক যেন ফসলের ন্যায্যমূল্য পান, তা নিশ্চিত করতে নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার।
আলী ইমাম বলেন, ‘কৃষক ও জিরাতিরা (হাওরের চাষি) হলেন দেশ উন্নয়নের প্রথম সারির সৈনিক। তাঁরা ভালো থাকলে দেশ ভালো থাকবে। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তাঁরা যে ফসল ফলান, তা দিয়ে আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর খাদ্যের জোগান হয়।’
উপদেষ্টার তথ্যমতে, হাওরের সেচ সমস্যা দূর, মাছ ধরার অজুহাতে অবৈধভাবে খাল-বিল শুকিয়ে ফেলা রোধ, সার-বীজের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা এবং ফসল সংরক্ষণ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার কাজ করছে।
উপদেষ্টা বলেন, মেঘনাসহ বড় বড় নদীগুলোও আজ নাব্যতা-সংকটে ভুগছে। হাওরের খাল-বিলগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় খালগুলো খনন করা সম্ভব। আর বড় নদ-নদীগুলো খনন করতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
হাওরকে বিপুল সম্ভাবনাময় জনপদ হিসেবে উল্লেখ করে আলী ইমাম বলেন, হাওর এলাকায় এখন কৃষকেরা কেবল ধান নয়, পাশাপাশি ভুট্টা, সবজি চাষ, হাঁস–মুরগি পালন, মাছ চাষসহ নানাবিধ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত। সরকার হাওরের যোগাযোগব্যবস্থাসহ আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপকভাবে কাজ করছে।
এ সময় উপদেষ্টা কৃষকদের কাছে তাঁদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে জানতে চান। বেশ কয়েকজন কৃষক সেচ সমস্যা, রাস্তাঘাটের সংকট ও খাবার পানির অভাব নিয়ে কথা বলেন। তখন জেলা প্রশাসককে এগুলো দ্রুত সমাধানের নির্দেশ দেন উপদেষ্টা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী, অষ্টগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দিলশাদ জাহান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অভিজিৎ সরকার প্রমুখ।
সভা শেষে উপদেষ্টা ভাতশালা হাওরের বোরো খেত ঘুরে দেখেন। এ সময় তিনি কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত কৃষক ও জিরাতিদের সমস্যার কথা শোনেন।